আগরা: শুক্রবার এক আজব ঘটনার সাক্ষী রইল আগরার জেলা হাসপাতাল। সেখানকার কর্মীরা পড়েন এক বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতিতে। ঠিক কী ঘটেছিল? এদিন একজন পুরোহিত ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মূর্তির ভাঙা হাত ব্যান্ডেজ করার অনুরোধ নিয়ে আসেন। রীতিমতো কান্নাকাটি জুড়ে দেন তিনি। স্বাভাবিকভাবেই বেজায় সমস্যায় পড়েন স্বাস্থ্যকর্মীরা।


হাসপাতালের কর্মীরা এদিন একজন পুরোহিতের মুখোমুখি হন। তাঁর একটাই দাবি। বিচলিত হয়ে পুরোহিতমশাই হাসপাতালে এসেছিলেন। এদিন সকালে স্নান করানোর সময় কোনওভাবে তাঁর দেবতার মূর্তির হাতটি ভেঙে যায়। দেবতার ভাঙা হাত সারিয়ে দেওয়ার আবেদন নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছন পুরোহিত মশাই।


বেশ অনিচ্ছা সত্ত্বেও খানিক পরে হাসপাতাল থেকে 'শ্রীকৃষ্ণ'-এর নামে একটি রেজিস্ট্রেশন বের করা হয়। একইসঙ্গে মূর্তির হাতও ব্যান্ডেজ করে দেওয়া হয় হাসপাতাল থেকে।


আরও পড়ুন: Happy Guru Nanak Jayanti 2021: গুরু নানক জয়ন্তীতে কীভাবে প্রিয়জনদের শুভেচ্ছাবার্তা পাঠাবেন?


সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিও। সেখানে দেখা যাচ্ছে একজন পুরোহিত মশাই কান্না জুড়েছেন। তাঁর হাতে রয়েছে নাড়ুগোপালের একটি মূর্তি যার একটা হাত ভাঙা। 


কিছু প্রত্যক্ষদর্শীর মতে, ওই পুরোহিত সকাল ৯ টার দিকে জেলা হাসপাতালে পৌঁছন এবং হাসপাতালের কর্মীদের কাতর আবেদন করতে থাকেন যাতে তাঁরা মূর্তির চিকিৎসা করেন।


লেখ সিংহ নামে ওই পুরোহিত মশাইয়ের দাবি, তিনি স্নান করানোর সময় মূর্তির হাত ভেঙে ফেলেছেন। তিনি বলেন, 'সকালে যখন আমি পুজো করছিলাম আর ঈশ্বরকে স্নান করাচ্ছিলাম তখন মূর্তিটা আমার হাত থেকে পড়ে যায় এবং হাত ভেঙে যায়।'


তিনি আরও বলেন, 'আমি ঈশ্বরের সঙ্গে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত ফলে আমি খুবই আঘাতপ্রাপ্ত হই। বাধ্য হয়ে আমি হাসপাতালের দ্বারস্থ হই যাতে তাঁরা সুশ্রুষা করে দেন।'


লেখ সিংহ গত ত্রিশ বছর ধরে অর্জুন নগরের খেরিয়া মোড়ের পাথোয়াড়ি মন্দিরের পৌরহিত্যের কাজ করছেন। 'হাসপাতালে কেউ আমার আবেদনকে গুরুত্ব দেননি। কিন্তু আমি অন্তর থেকে ভেঙে পড়েছিলাম এবং আমার ঈশ্বরের জন্য কাঁদতে শুরু করি।' লেখ সিংহের সঙ্গে হাজির হয়েছিলেন একাধিক স্থানীয় বাসিন্দাও, জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।


জেলা হাসপাতালের চিফ মেডিক্যাল সুপারিন্টেনডেন্ট, ডা. অশোক কুমার আগরওয়াল বলেন, যে তাঁকে খবর দেওয়া হয় যে একজন পুরোহিত এসেছেন তাঁর দেবতার মূর্তির ভাঙা হাতের চিকিৎসা করাতে, এবং এও জানানো হয় যে তিনি কান্নাকাটিও করছেন। ওই পুরোহিতের অনুভূতির কথা মাথায় রেখেই হাসপাতালের পক্ষ থেকে 'শ্রীকৃষ্ণ'-এর নামে রেজিস্ট্র্রেশন করানো হয়।