বেঙ্গালুরু: বিধানসভা নির্বাচনের আগে টিপু সুলতান বনাম সাভারকর তত্ত্বকে প্রতিষ্ঠা করার অভিযোগ উঠেছে আগেই (Karnataka Assembly Elections)। ভোটমুখী কর্নাটকে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার ফের ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতির অভিযোগে বিদ্ধ। শুক্রবার অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির অন্তর্গত মুসলিমদের জন্য ৪ শতাংশ সংরক্ষণ তুলে নেওয়া হয়েছে সেখানে, যা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। কারণ এই সিদ্ধান্তের ফলে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি হিসেবে সংরক্ষণ আর পাবেন না মুসলিমরা। একমাত্র অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে থাকলে, তার আওতায় আবেদন জানাতে পারবেন (Karnataka Quotas)।


এই ঘোষণা বিজেপি-র হিন্দুত্ববাদী, মেরুকরণের রাজনীতিরই প্রমাণ বলে অভিযোগ বিরোধীদের


কর্নাটকে অনগ্রসর শ্রেণির জন্য বরাদ্দ সংরক্ষণে এতদিন অন্তর্ভু্ক্ত ছিলেন রাজ্যের মুসলিম নাগরিকরাও। কিন্তু শুক্রবার কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসরাজ বম্মাই, দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ যিনি, মুসলিমদের জন্য বরাদ্দ সংরক্ষণ প্রত্যাহারের ঘোষণা করেন। বিধানসভা নির্বাচনে একমাস বাকি থাকতে তাঁর এই ঘোষণা আসলে বিজেপি-র হিন্দুত্ববাদী, মেরুকরণের রাজনীতিরই প্রমাণ বলে অভিযোগ বিরোধীদের। 


আরও পড়ুন: Rahul Gandhi: সাংসদ পদ খারিজ হয়েছিল ইন্দিরারও, পদচ্যুতের তালিকা দীর্ঘ, নবতম সংযোজন রাহুল


নয়া ঘোষণার পর কর্নাটকে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির জন্য বরাদ্দ সংরক্ষণের আওতায় রয়েছেন ভোক্কালিগা এবং লিঙ্গায়তরা। রদবদলের পর ভোক্কালিগাদের জন্য বরাদ্দ সংরক্ষণ বাড়িয়ে ৫ থেকে ৬ শতাংশ করা হয়েছে। পঞ্চমশালী, বীরশৈব এবং লিঙ্গায়তদের ক্ষেত্রেও ৫ থেকে সংরক্ষণের হার বেড়ে হয়েছে ৭ শতাংশ।  এর মধ্যে ভোক্কালিগারা বরাবরই কংগ্রেস সমর্থক। তাঁদের নিজেদের দলে টানার জন্য বেশ কিছু দিন ধরেই রাজ্যে সক্রিয় বিজেপি। ভোক্কালিগাদের নিয়ে রাজনীতি বহুদিনের।  পুরাতন মহীশূরের ভোক্কালিগা সম্প্রদায়ের বিশ্বাস, তাদের দুই নেতা উরি গৌড়া এবং নানজে গৌড়ার হাতেই টিপুর মৃত্যু।  ভোক্কালিগাদের সেই ধারণাকে প্রতিষ্ঠা করতে ইতিমধ্যেই প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে বিজেপি-র তরফে। যদিও ইতিহাসবিদদের দাবি, উরি গৌড়া এবং নানজে গৌড়া আসলে কাল্পনিক চরিত্র, বাস্তবে তাঁদের অস্তিত্ব ছিল না।


তবে বাসবরাজের এই ঘোষণার পর কর্নাটকে সংরক্ষণের হার ৫৭ শতাংশে গিয়ে ঠেকল। সুপ্রিম কোর্ট যদিও তা ৫০ শতাংশে বেঁধে দিয়েছিল। বাসবরাজের কথায়, "গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। মন্ত্রিসভার শাখা কমিটি সংরক্ষণের বিভাগে রদবদল ঘটানোর সুপারিশ করেছিল। তা মেনে নেওয়া হয়েছে।" অন্য়ান্য অনগ্রসর শ্রেণিকে আপাতত অনগ্রসর শ্রেণি এবং আরও অনগ্রসর শ্রেণি, এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।


রাজ্যের ক্ষেত্রে সংরক্ষণের হার কখনও ৫০ শতাংশের উপরে যেতে পারে না


বিভিন্ন রাজ্যের ক্ষেত্রে সংরক্ষণের হার কখনও ৫০ শতাংশের উপরে যেতে পারে না বলে আগেই জানিয়েছিল শীর্ষ আদালত। কর্নাটক সরকারকে সেই মতো সংরক্ষণের হার কমিয়ে ৫০ বা তার নিচে নিয়ে আসতে বলা হয়েছিল। সেই সংক্রান্ত একটি মামলা কর্নাটক হাউকোর্টে ঝুলছে। তার রায়ের জন্য অপেক্ষা না করেই সংরক্ষণের হারে রদবদল ঘটাল কর্নাটক সরকার।