এলাহাবাদ: বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন (Uttar Pradesh Assembly Election 2022)। তার জন্য জোরকদমে চলছে প্রচার অভিযান। কিন্তু ওমিক্রন ঘিরে উদ্বেগের মধ্যে এ বার উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করল এলাহাবাদ হাই কোর্ট (Allahabad High Court)। সরাসরি নির্বাচন কমিশন (Election Commission) এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (Narendra Modi) সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছে আদালত। বলা হয়েছে, যে হারে ওমিক্রন সংক্রমণ বেড়ে চলেছে, তাতে সব রকমের নির্বাচনী সমাবেশ আপাতত বন্ধ রাখা হোক। দু’-তিন মাসের জন্য পিছিয়ে দেওয়া হোক নির্বাচনও।
বৃহস্পতি বার একটি মামলার শুনানি চলাকালীন ভোট পিছিয়ে দেওয়ার সুপারিশ করে এলাহাবাদ হাই কোর্ট। বিচারপতি শেখর যাদব বলেন, ‘‘নির্বাচনী সভা এবং সমাবেশ বন্ধ না হলে। দ্বিতীয় ঢেউয়ের থেকেও ভয়ঙ্কর পরিণতি হবে। প্রাণ বাঁচলে তবেই সব কিছু বজায় থাকবে। ওমিক্রন সংক্রমণ যে ভাবে বেড়ে চলেছে, তাতে করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে।’’
এর আগে, করোনা মাথায় নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-সহ একাধিক রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন করানোর জন্য প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল নির্বাচন কমিশনকে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য সরাসরি তাদের দায়ী করেছিল আদালত। আদালতে তারও উল্লেখ করেন বিচারপতি শেখর যাদব। তিনি বলেন, ‘‘গ্রাম পঞ্চায়েত এবং বাংলার নির্বাচন ঘিরে সংক্রমণ একধাক্কায় বেড়ে গিয়েছিল। বহু মানুষ সংক্রমিত হয়ে পড়েছিলেন। এখন ফের যে ভাবে সভা-মিছিল হচ্ছে, তাতে কোভিড বিধি বজায় রাখা কোনও ভাবেই সম্ভাব নয়। তাই উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ রয়েছে।’’
আরও পড়ুন: Night Curfew in MP: ওমিক্রন উদ্বেগের মধ্যে ফের নৈশ কার্ফু মধ্যপ্রদেশে
নির্বাচন কমিশনকে অবিলম্বে সমস্ত রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার আর্জি জানিয়েছে এলাহাবাদ হাই কোর্ট। আদালতের মতে, আর যদি প্রচার করতেই হয় তাহলে দূরদর্শন এবং সংবাদপত্রের মাধ্যমে তা করুক রাজনৈতিক দলগুলি। সশরীরে কোনও সভা-সমাবেশ না হওয়াই শ্রেয়। সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদের উল্লেখ করে আদালত জানায়, সমস্ত ভারতীয় জীবনের অধিকার রয়েছে। কোনও পরিস্থিতিতেই তার সঙ্গে আপস করা চলবে না।
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে এই মুহূর্তে উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে উত্তরপ্রদেশে। লোকসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রেও যেহেতু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা উত্তরপ্রদেশের, তাই ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে, সেখানে দ্বিতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরতে মরিয়া বিজেপি। তার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথদের অহরহ প্রচারে নামতে দেখা যাচ্ছে। আবার বিজেপি-কে রুখতে সবরকমের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সমাজবাদী পার্টি (SP), কংগ্রেস এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলিও।জায়গায় জায়গায় সমাবেশ করছে সব রাজনৈতিক দলগুলিও। তাতে কোভইড বিধির বালাই প্রায় থাকছেই না। তাতেই উদ্বিগ্ন আদালত।