ঋত্বিক মণ্ডল, ঝিলম করঞ্জাই, শালবনি: সাড়ে তিন বিঘে জমিতে চাষবাস করে দিন গুজরান। এত বড় ভিআইপি অতিথি এসে পড়ায় দৃশ্যতই নার্ভাস ছিলেন শালবনির বালিজুড়ির সনাতন সিংহ। অবশ্য তার মধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে অনুরোধ করেছেন গ্রামের উন্নয়নের জন্য।


উচ্ছে ভাজা, শুক্তো দিয়ে শুরু। নলেন গুড়ের রসগোল্লা থেকে চাটনি, পাঁপড় দিয়ে শেষ। বঙ্গ সফরে এসে ফের আদিবাসী পরিবারে পাত পেড়ে খেলেন অমিত শাহ। বালিজুড়িতে ঢুকে দুটো বাড়ি পার হলেই কৃষক সনাতন সিংহের বাড়ি। এক চালা মাটির বাড়ি, নিকোনো উঠোন। ঘরের দেওয়াল সাজানো আলপনায়, বাংলায় লেখা স্বাগতম। শাঁখ বাজিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানালেন বাড়ির মহিলারা।

সাড়ে তিন বিঘা জমির মালিক সনাতন সিংহ। পরিবারে মা, বাবা, স্ত্রী ও সন্তান। টানাটানির সংসার হলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আপ্যায়নে কোনও খামতি রাখতে চাননি তাঁরা। সকাল আটটা থেকে শুরু হয় রান্না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিরামিশাষী, সে কথা মাথায় রেখে প্রস্তুত হয় স্যালাড, ভাত, রুটি, ডাল, শুক্তো, ফুলকপি রসা, পোস্ত দিয়ে শাক ভাজা, উচ্ছে ভাজা, পটল ভাজা, টক দই, খেজুর গুড়ের রসগোল্লা, চাটনি, পাঁপড়।

অমিত শাহ আসার আগে থেকে গোটা বাড়ি স্যানিটাইজ করা হয়। আশেপাশের গ্রাম থেকে এসে মানুষ যাতে ভিড় জমাতে না পারেন তার জন্য হয় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা। বেলা পৌনে দুটো নাগাদ সনাতনের বাড়ি এসে পৌঁছন অমিত শাহ। খাটিয়ায় বসে খানিক বিশ্রাম নেন, তারপর মধ্যাহ্নভোজ। থালার ওপর কলাপাতা পেতে ভাগে ভাগে সাজিয়ে দেওয়া হয় খাবারদাবার। মাটির দাওয়ায় বসে খেলেন অমিত শাহ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, দিলীপ ঘোষ ও মুকুল রায়। পরিবারের কর্তা হিসেবে তাঁদের সঙ্গে বসে খেলেন সনাতনের বাবা রায়মণি সিংহ।

নকশালবাড়ির মাহালি দম্পতিকে দিয়ে শুরু। ২০১৭-র এপ্রিলে রাজ্যে এসে ওই দম্পতির বাড়ি মধ্যাহ্নভোজ সারেন অমিত শাহ। গত মাসে বাঁকুড়া সফরে এসে আদিবাসী পরিবারে মধ্যাহ্নভোজ করেন তিনি। বাগুইআটির মতুয়া পরিবারেও দুপুরের খাবার খান। সেই ট্রাডিশন এবার মেদিনীপুরে।