নয়াদিল্লি: ভোটার তালিকায় থাকতে হবে জন্ম-মৃত্যু সংক্রান্ত নথিও। এই মর্মে নয়া বিল আনতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থেই এমন চিন্তা-ভাবনা বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah )। এতে নাগরিকদের নাম আপনাআপনিই ভোটার তালিকায় নথিভুক্ত হবে এবং তা বাদও দিতেও সুবিধা হবে বলে মত তাঁর।
সোমবার রেজিস্ট্রার জেনারেল এবং সেনসাস কমিশন অফ ইন্ডিয়ার ‘জনগণ ভবনে’র উদ্বোধন করেন শাহ। সেখানেই নয়া বিলের কথা জানান তিনি। তাঁর মতে, জনগণনাই উন্নয়নের ভিত্তি। সেই প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা থাকা জরুরি। কারণ তার উপর ভিত্তি করেই উন্নয়নমূলক নীতি নির্ধারণ করে কেন্দ্র, যাতে দরিদ্র থেকে দরিদ্রতম মানুষের কাছে বহুমাত্রিক সুবিধা পৌঁছে দেওয়া যায়।
ভোটার তালিকায় জন্ম এবং মৃত্যুর শংসাপত্র সংক্রান্ত তথ্য তুলে রাখার সপক্ষে শাহ বলেন, “ভোটার তালিায় জন্মমৃত্যুর তথ্য উল্লেখ রাখতে সংসদে নয়া বিল আনা হবে। এর আওতায়, ১৮ বছর বয়সে পা দিলে, আপনা আপনিই, সেই নাগরিকের নাম ভোটার তালিকায় উঠে যাবে। একই ভাবে, কেউ মারা গেলে, সেই তথ্যও পৌঁছে যাবে ইলেকশন কমিশনের হাতে। সেই মতো ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে নাম।”
আরও পড়ুন: Whatsapp Edit Message: প্রতীক্ষার অবসান, অবশেষে হোয়াটসঅ্যাপে হাজির মেসেজ পাঠানোর পরেও এডিটের সুবিধা
যথাযথ ভাবে, ডিজিটাল মাধ্যমে এই কাজ সম্পূর্ণ করার চিন্তাভাবনা চলছে বলে জানিয়েছেন শাহ। দিল্লির একটি সূত্র জানাচ্ছে, নয়া বিল এনে ১৯৬৯ সালের রেজিস্ট্রেশন অফ বার্থ অ্যান্ড ডেথ আইনে সংশোধন ঘটানো হবে। এতে ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্ট তৈরির কাজও সহজ হবে, আবার সহজে সরকারের কল্যাণমূলক প্রকল্পগুলির সঙ্গে যুক্ত করা যাবে সাধারণ মানুষকে।
শাহের কথায়, “বিশেষ পদ্ধতিতে যদি জন্মমৃত্যুর শংসাপত্র সংরক্ষণ করা যায়, সে ক্ষেত্রে জনগণনা এবং উন্নয়নমূলক নীতি নির্ধারণের কাজও সঠিক ভাবে সম্পাদিত হবে।” এই সংক্রান্ত বিশদ তথ্য হাতে মজুত না থাকাতেই, এত দিন উন্নয়নের গতি শ্লথ ছিল বলেও দাবি করেন শাহ।
এর আগেও, কেন্দ্রের তরফে জন্ম-মৃত্যু নথিভুক্তি আইনে সংশোধনের প্রস্তাব তোলা হয়। তাকে ঘিরে বিতর্ক দেখা দেয়। কারণ এই মুহূর্তে জন্ম এবং মৃত্যু নথিভুক্ত করার বিষয়টি রাজ্যের হাতে রয়েছে। তার জন্য রেজিস্ট্রার নিয়োগ করে রাজ্য। রাজ্যের সেই তথ্যভাণ্ডার মুখ্য রেজিস্ট্রারের হাতে থাকে।
আপাতত জন্ম এবং মৃত্যুর নথিভুক্তকরণের বিষয়টি রাজ্যের হাতে আছে। নথিভুক্তকরণের জন্য স্থানীয় রেজিস্ট্রার নিয়োগ করে রাজ্য। সামগ্রিকভাবে রাজ্যের সেই তথ্যভাণ্ডারের দায়িত্ব থাকে মুখ্য রেজিস্ট্রারের কাঁধে। সেই আইনে সংশোধন ঘটিয়ে কেন্দ্র জাতীয় তথ্যভাণ্ডার করে তুলতে আগ্রহী। এর মাধ্যমে জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জির পথ আরও প্রশস্ত হবে বলে মত বিজেপি বিরোধী শিবিরের। যদিও এর আগে কেন্দ্র জানিয়েছিল, জনগণনা থেকে পাওয়া তথ্য NPR তৈরির কাজে ব্যবহৃত হবে না।