নয়াদিল্লি: নবনির্মিত রামমন্দিরের নির্মাণ ঘিরে দিনভর খবরে থেকেছে অযোধ্যা। অযোধ্যার মতো প্রচারের আলোয় না এলেও, সোমবার আরও একটি রামমন্দিরের উদ্বোধন হল দেশে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৮০০ ফুট উচ্চতায়, পাহাড়ের একেবারে চূড়ায় দ্বিতীয় রামমন্দিরটির উদ্বোধন হল আজ। গ্রামবাসী এবং শুভাকাঙ্খীদের দান করা টাকাতেই মন্দিরটির নির্মাণ করা হয়েছে। অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনের দিনই, ওই মন্দিরটির উদ্বোধন হল ওড়িশায়। (Ram Mandir in Odisha)


উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় কয়েক একর জায়গা জুড়ে নির্মিত রামমন্দিরের উদ্বোধন সম্পন্ন হল সোমবার। সেখানে 'রামলালা' অর্থাৎ ভগবান রামচন্দ্রের শিশুকালের মূর্তিতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করেন প্রধআনমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রাজনীতিতে যুক্ত তাবড় নেতা থেকে বিনোদন এবং ক্রীড়াজগতের তাবড় তারকারা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন। দিনভর, প্রতি মুহূর্ত সেদিকেই নজর ছিল গোটা দেশের। সেই নিরিখে ওড়িশার নবনির্মিত রামমন্দিরটি প্রচার পেল না তত। (Odisha Ram Mandir)


অযোধ্যা থেকে ১০০০ কিলোমিটার দূরে, ওড়িশার নয়াগড়ের ফতেপুর গ্রামে একটি পাহাড়ের চূড়ায় রামমন্দিরটি তৈরি করা হয়েছে। মন্দিরটির উচ্চতা ১৬৫ ফুট। ভগবান রামের ভক্ত, গ্রামবাসী এবং তাঁদের শুভাকাঙ্খীদের দেওয়া অনুদানের টাকাতেই মন্দিরটির নির্মাণ হয়েছে। মন্দিরটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে প্রায় ১০ কোটি টাকা। এর অর্ধেকই দিয়েছেন গ্রামবাসীরা। পাহাড়ের উপর, মনোরম পরিবেশে অবস্থিত মন্দিরটি। চারিদিকে তাকালে চোখ জুড়িয়ে যায়।



আরও পড়ুন: Ambani Family in Ayodhya: অযোধ্যায় সনাতনী সাজে হাজির আম্বানি পরিবার, মুকেশ বললেন, ‘আজ দেশে অকাল দীপাবলি’


স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মারফত জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালে মন্দির তৈরির কার্য শুরু হয়। ১৫০ জন শ্রমিক দিনরাত এক করে খেটে গিয়েছেন। ভগবান রামকে ভালবেসে, তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা থেকেই নিঃস্বার্থ ভাবে পরিশ্রম করে গিয়েছেন তাঁরা। তিল তিল করে গড়ে তুলতেই সাত বছর লেগে গিয়েছে। এমনিতেই ওড়িশায় বছরভর পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। এই মন্দিরকে ঘিরে পর্যটন ব্যবসায় জোয়ার আসবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।


যে ফতেগড়ে নবনির্মিত রামমন্দিরটির উদ্বোধন হল, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের সঙ্গেও তার গভীর সংযোগ। ১৯১২ সালে 'নবকলেবর' অর্থাৎ পুরীর মন্দিরে জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার বিগ্রহের কাঠ বদলানো হলে, ফতেগড়ের একটি পবিত্র গাছ থেকেই সেই কাঠ গিয়েছিল। সেই সংযোগ ধরে রাখতে ফতেগড়ের গ্রামবাসীরা মিলে 'শ্রী রাম সেবা পরিষদ কমিটি'ও গঠন করেছেন, যাদের নেতৃত্বে মন্দির নির্মাণ সম্পন্ন হয়।


যে পাহাড়ের উপর মন্দিরটি নির্মিত হয়েছে, সেটিরও গুরুত্ব রয়েছে স্থানীয়দের কাছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, খরার সময় ওই পাহাড়ের উপর সমবেত হয়ে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করতেন গ্রামবাসীরা। ওই পাহাড়কে 'গিরি গোবর্ধন' নামে অভিহিত করা হয়। নবনির্মিত রামমন্দিরটির গায়ে ওড়িশার চিরাচরিত ভাস্কর্যই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।  মন্দিরের গর্ভগৃহটির উচ্চতাই ৬৫ ফুট। মূল মন্দিরকে ঘিরে রয়েছে অতিরিক্ত গর্ভগৃহ, যেখানে সূর্যদেবতা, মহাদেব, গণেশ এবং হনুমান বিরাজ করছেন।