মঙ্গডাও : কেউ স্বপ্ন দেখছেন চার দিনে কলকাতা দখল করে নেওয়ার ! কেউ আবার ভারতের বিরুদ্ধে দেশের নাগরিকদের যুদ্ধের প্রশিক্ষণ দিতে চাইছেন ! কিন্তু, যুদ্ধজিগির তোলা সেই বাংলাদেশের কাছেই এখন বড় মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মায়ানমার সীমান্ত। বাংলাদেশ-মায়ানমারের ২৭১ কিলোমিটার সীমান্ত দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি। সীমান্তবর্তী নাফ নদীর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তারা। এখন নিজেদের সীমান্তই সুরক্ষিত রাখা নিয়ে চাপে রয়েছে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড। বিদ্রোহ-বিধ্বস্ত প্রতিবেশী মায়ানমারে কোণঠাসা জুন্টা সরকার। বাংলাদেশ লাগোয়া মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের অধিকাংশই আরাকান আর্মির দখলে। রোহিঙ্গা বসবাসকারী রাখাইন প্রদেশ দখল করে নিয়েছে আরাকান আর্মি। ফের রোহিঙ্গা শরণার্থীর ঢল নামার প্রমাদ গুনছে ইউনূস প্রশাসন।
আরাকান আর্মি কারা ?
মায়ানমারের রাখিন সম্প্রদায়ের সামরিক বিভাগ হচ্ছে আরাকান আর্মি বা AA। ২০০৯ সালে যার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন প্রাক্তন ছাত্র-সমাজকর্মী তোয়ান ব়্যাট নেইঙ্গ। জেড খনিতে কর্মরতদের থেকে প্রথম দফায় যোদ্ধা নিয়োগ করে এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী। এই সেনা উত্তর মায়ানমারের কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্স আর্মির কাছে আশ্রয় চায়। ২০১৯ সালে স্বাধীনতা দিবসের দিন রাখিন প্রদেশের চারটি থানায় হামলা চালায় এএ। এরপরই জঙ্গিদের নিকেশ করতে সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ দেন আং স্যান সু কি। যদিও পরে উভয়পক্ষ যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে।
রাখিন প্রদেশ কেন গুরুত্বপূর্ণ ?
মায়ানমার জুড়ে চলতে থাকা গৃহযুদ্ধের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এই রাখিন। যেখানে গণতন্ত্রপন্থী গেরিলা ও সংখ্যালঘু উপজাতির সশ্ত্র বাহিনী স্বশাসনের দাবিতে দেশের সামরিক শাসকের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত। আং স্যান সু কি-র নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে ২০২১ সালে ক্ষমতা দখল করে এই সামরিক শাসক। ২০২৩ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত রাখিনের ১৭টি শহরের মধ্যে ১১টিতে নিয়ন্ত্রণ লাভ করে আরাকান আর্মি। এর একটি রয়েছে প্রতিবেশী চিন-সীমান্তবর্তী এলাকায়।
এদিকে চরম নৈরাজ্য চলছে বাংলাদেশেও। সেখানে সংখ্যালঘুদের উপর লাগাতার অত্যাচার চলছে। বিশেষ করে হিন্দুদের বেছে বেছে মারধর করা হচ্ছে। তাঁদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হচ্ছে, জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মন্দিরেও চলছে ভাঙচুর। কার্যত ভয়ে ভয়ে দিন কাটছে সেখানকার হিন্দুদের। এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে অনেক সংখ্যালঘু হিন্দুই ভারতে ঢোকার চেষ্টা করছে। এই পরিস্থিতিতে অবৈধ অনুপ্রবেশ রুখতে ভারতীয় সীমান্তে সক্রিয় রয়েছে বিএসএফ। দিনকয়েক আগে খবর মেলে, ভারতীয় সীমান্তে গোপনে নজরদারি চালাচ্ছে বাংলাদেশ। সীমান্তে টহলদারি বাড়ানো হয়েছে বিডিআর-এর তরফে।