নয়াদিল্লি: 'আমার জীবন দেশের জন্য নিবেদিত। জেলের পিছনে থাকলেও দেশের জন্য কাজ করে যাব', ইডি-র হাতে গ্রেফতারির পর প্রথম প্রতিক্রিয়ায় বললেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল (Arvind Kejriwal Arrest)। শুক্রবার, তাঁকে কোর্টে নিয়ে যাওয়ার পথে একদল সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এই বার্তাই দেন 'আম আদমি পার্টি' প্রধান। পরে খবর আসে, কেজরিওয়ালকে ১০ দিনের হেফাজতে চেয়েছে ইডি।   


শুক্রবার যা যা ঘটল...
দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় বৃহস্পতিবার, গ্রেফতার হন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। এর আগে, তাঁর মন্ত্রিসভার উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়াকে এই মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল। গ্রেফতার হন আম আদমি পার্টির সাংসদ সঞ্জয় সিং। এখানেই শেষ নয়। পরে 'ভারত রাষ্ট্র সমিতি'-র প্রধান তথা তেলঙ্গানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কেসিআরের কন্যা কে কবিতাকেও গ্রেফতার করা হয়। তদন্তের গতিপ্রকৃতি দেখে রাজনৈতিক মহলে দীর্ঘ গুঞ্জন ছিল, এর পর কি কেজরিওয়ালের পালা? লোকসভা ভোটের মুখে পদে থাকাকালীন এক মুখ্যমন্ত্রীর গ্রেফতারি সেই প্রশ্নের শুধু স্পষ্ট উত্তর দেয়নি, বরং বিরোধীদের সমালোচনায় নতুন অক্সিজেন জুগিয়েছে। বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলিতে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলির অপব্যবহার করছে মোদি সরকার, এই অভিযোগ নতুন নয়। কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির পর সেই অভিযোগে তুমুল ভাবে শোরগোল ফেলার চেষ্টা শুরু করেছে বিজেপি-বিরোধী 'ইন্ডিয়া' জোটের দলগুলি। গত কাল থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় একের পর এক প্রতিক্রিয়ার জোয়ার। পাশাপাশি, দেশের নানা প্রান্তে বিক্ষোভ দেখান আম আদমি পার্টির কর্মী-সমর্থকরা। 
একদিকে যেমন রাজনৈতিক ভাবে এই গ্রেফতারির বিরোধিতা হচ্ছে, অন্য দিকে সেভাবেই আইনি পথেও এগিয়ে যেতে লড়াই জারি রাখতে কসুর করছে না আপ। তবে সুপ্রিম কোর্টে জরুরি ভিত্তিতে শুনানির যে আবেদন জানানো হয়েছিল, তা প্রত্যাহার করে নিয়েছে দল।  কেজরিওয়ালের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি বলেন, 'নিম্ন আদালতে মামলার শুনানি হবে, সে জন্য আবেদন প্রত্যাহার করা হয়েছে।'      


মামলা সম্পর্কে...
ইডি-র সওয়াল, আবগারি দুর্নীতির মামলার 'প্রধান ষড়যন্ত্রকারী' ছিলেন কেজরিওয়াল।  কেন্দ্রীয় এজেন্সির হিসেব অনুযায়ী, এই দুর্নীতির আর্থিক পরিমাণ প্রায় ৬০০ কোটি টাকা। আদালতে ইডি-র দাবি করেছে, 'নীতির বাস্তবায়নে উনি সরাসরি যুক্ত ছিলেন। সাউথ গ্রুপের প্রতি পক্ষপাতও করেছেন। এই পক্ষপাতের পরিবর্তেও উৎকোচ চান তিনি...বিভিন্ন বয়ানে এই দাবির সঙ্গতি পাওয়া গিয়েছে।'  দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবীর পাল্টা সওয়াল ছিল, এই আর্থিক দুর্নীতির তদন্তের জন্য গ্রেফতারির কোনও দরকার নেই। কেন্দ্রীয় এজেন্সি যে দাবি করছে, তার ভিত্তিতে বড়জোর জিজ্ঞাসাবাদ করা যেতে পারে। 


আরও পড়ুন:১০ দিনের ইডি হেফাজতে কেজরিওয়াল, কী অভিযোগ তদন্তকারী সংস্থার?