নয়াদিল্লি: অভিযোগ-অনুযোগ পর্ব পেরিয়ে অবশেষে তিহাড় জেলে (Tihar Jail) ইনসুলিন পেলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তাঁর রক্তে শর্করার মাত্রা ৩২০-তে পৌঁছে গিয়েছিল বলে খবর। বার বার অনুরোধ জানানো সত্ত্বেও তাঁকে ইসনুলিন দেওয়া হচ্ছিল না বলে তিহাড় কর্তৃপক্ষকে গতকালই কাঠগড়ায় তুলেছিলেন কেজরিওয়াল। ব্যক্তিগত চিকিৎসকের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলতে দেওয়া হচ্ছিল না বলেও দাবি করেছিলেন। গতকাল কেজরিওয়ালের সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিলেও, রাতে শেষ পর্যন্ত কেজরিওয়ালকে ইনসুলিন দেওয়া হয়েছে হলে জানা গিয়েছে। তিহাড়ে যাওয়ার পর এই প্রথম কেজরিওয়াল ইনসুলিন পেলেন বলে জানা গিয়েছে। (Arvind Kejriwal)
বুধবার আম আদমি পার্টির নেতা সৌরভ ভরদ্বাজ বিবৃতি দিয়ে বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী যে সত্য বলছিলেন, আবারও তা প্রমাণিত হল। ওঁর ইনসুলিন প্রয়োজন ছিল। কিন্তু বিজেপি-র কেন্দ্রীয় সরকার অধীনস্থ তিহাড় আধিকারিকরা ইচ্ছাকৃত ভাবে তাঁর চিকিৎসা হতে দিচ্ছিলেন না। বিজেপি-র লোকজনের কাছে জানতে চাই, সত্যিই যতি ইনসুলিনের প্রয়োজন না থাকে, তাহলে এখন তাহলে দেওয়া হল কেন? সব মহল থেকে সমালোচনার শিকার হয়েই ইনসুলিন দিতে হল।"
সোমবার তিহাড় কর্তৃপক্ষ জানান, কেজরিওয়ালের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে ইনসুলিনের প্রসঙ্গই ওঠেনি। তাই তাঁকে ইনসুলিন দেওয়া হয়নি। কিন্তু তিহাড় কর্তৃপক্ষের সেই দাবি খণ্ডন করেন কেজরিওয়াল। জানান, লাগাতার ইনসুলিন প্রয়োজন বলে আর্তি জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু একটি বারের জন্যও তাঁর সেই আবেদন গৃহীত হয়নি। এর পরই দিল্লির আদালত AIIMS-এর চিকিৎসকদের কেজরিওয়ালের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করতে নির্দেশ দেয়। চিকিৎসকদের পরামর্শেই রাতে ২ ইউনিট ইনসুলিন দেওয়া হয় কেজরিওয়ালকে।
টাইপ-২ ডায়বিটিসের রোগী কেজরিওয়াল। AAP জানিয়েছে, দিনে ৫৪ ইউনিট ইনসুলিন নিতে হয় তাঁকে। গত ২১ মার্চ আবগারি দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হন কেজরিওয়াল। ১ এপ্রিল থেকে তিহাড় জেলে রয়েছেন। কিন্তু সেখানে তাঁকে রোজকার প্রয়োজনীয় ইনসুলিন দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ ওঠে। AAP অভিযোগ তোলে, কেজরিওয়ালকে হত্যার ষড়যন্ত্র চলছে, তাই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। সেই তরজা আদালতে পর্যন্ত পৌঁছয়। সেখানে কেজরিওয়াল জানান, প্রয়োজনীয় ইনসুলিনও দেওয়া হচ্ছে না তাঁকে, ব্যক্তিগত চিকিৎসকের সঙ্গে কথাও বলতে দেওয়া হচ্ছে না।
এর পাল্টা কেজরিওয়াল নাটক করছেন বলে পাল্টা অভিযোগ তোলে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। আদালতে তাদের আইনজীবী বলেন, "জেনেশুনেই চিনি দেওয়া চা পান করছেন কেজরিওয়াল, কলা খাচ্ছেন, আম খাচ্ছেন, মিষ্টি খাচ্ছেন, আলুর তরকারি-লুচি খাচ্ছেন, যা টাইপ-২ ডায়বিটিস রোগীদের মুখে তোলাই উচিত নয়। এগুলো খেলে যে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে পারে, তা বিলক্ষণ জানেন উনি। আসলে চিকিৎসাজনিত জরুরি অবস্থা সৃষ্টি করতে চাইছেন উনি, যাতে আদালতের সমবেদনা কুড়োতে পারেন।" পাল্টা AAP-এর দাবি, কেন্দ্র থেকে রাজনৈতিক চাপ আসছে বলেই কেজরিওয়ালের স্বাস্থ্য নিয়ে হেলাফেলা করছেন তিহাড় কর্তৃপক্ষ। এমনকি কেজরিওয়ালকে হত্যার ছক রয়েছে বলেও দাবি তাদের।