নয়াদিল্লি: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ-র বেশ কিছু অংশ ভারতীয় সংবিধান লঙ্ঘন করতে পারে, দাবি মার্কিন কংগ্রেসের স্বাধীন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (US Research Body Report On CAA)। 'কংগ্রেশনাল রিসার্চ সার্ভিস' বা সিআরএস নামে ওই প্রতিষ্ঠানের 'ইন ফোকাস' শীর্ষক রিপোর্টের 'ব্রিফ'-এ বলা হয়েছে, 'সিএএ-র যে মূল নির্যাস---তিনটি দেশ থেকে আসা অ-মুসলিম ছটি ধর্মের অভিবাসীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার এই প্রক্রিয়া ভারতীয় সংবিধানের বেশ কিছু অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করতে পারে।' চলতি বছর মার্চ মাসে, হঠাৎ বিজ্ঞপ্তি জারি করে দেশজুড়ে সিএএ বিধি লাগু করে কেন্দ্রীয় সরকার। তার পর থেকে টানা এই নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এর মধ্যে মার্কিন কংগ্রেসের স্বাধীন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের এই রিপোর্ট কি অস্বস্তি বাড়াবে কেন্দ্রের?
বিশদ...
এমনিতে 'কংগ্রেশনাল রিসার্চ সার্ভিস', মার্কিন কংগ্রেসের স্বাধীন গবেষণা প্রতিষ্ঠান। কংগ্রেস সদস্য়দের জন্য প্রাসঙ্গিক নানা বিষয়ে রিপোর্ট তৈরিই এর মূল কাজ। তবে এর রিপোর্ট মার্কিন কংগ্রেসের সরকারি পর্যবেক্ষণ বলে বিবেচিত হয় না। সে দিক থেকে দেখলে, সিএএ নিয়ে তাদের রিপোর্টের পরিসরও সীমিত। কিন্তু যে ভাবে ইতিমধ্যে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে দেশেই এই নিয়ে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে, তাতে মার্কিন কংগ্রেসের স্বাধীন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের এই রিপোর্ট নতুন বিড়ম্বনা বাড়াবে না এ কথা এখনই জোর দিয়ে বলার জো নেই। রিপোর্টে আরও লেখা, 'কেন্দ্রীয় সরকারের পরিকল্পিত ন্যাশনাল রেজিস্ট্রার অফ সিটিজেনস-র সঙ্গে সমন্বয়ে এটি ভারতের ২০ কোটিরও বেশি মুসলিম সংখ্যালঘুদের অধিকারকে বিপদের মুখে ঠেলে দিতে পারে।' রিপোর্টে এক মার্কিন কূটনীতিবিদের কথাও উল্লেখ করেছে সিআরএস। ২০১৯ সালেই যিনি গোটা বিষয়টি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। 'মুক্ত এবং স্বাধীন ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের' ভাবনা বাস্তবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথে সিএএ-র মতো বিষয় কোনও অন্তরায় তৈরি করবে কিনা, এই নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন ওই মার্কিন কূটনীতিবিদ।
কেন্দ্রের অবস্থান...
সিএএ বিধি মার্চে হঠাৎ লাগু হওয়ার পর থেকে দেশেও তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়তে হয়েছে কেন্দ্রের সরকারকে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট বিরোধিতা করেছেন। কিন্তু শত চাপের মুখেও কেন্দ্রীয় সরকার নিজ অবস্থানে অনড়। হালে, নির্বাচনী প্রচারের কাজে পশ্চিমবঙ্গে এসে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংও জানিয়ে যান, এটি বলবৎ হওয়া কেউ আটকাতে পারবে না। তাদের যুক্তি, এই আইন নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন, কেড়ে নেওয়ার আইন নয়। যদিও বিরোধী শিবিরের বক্তব্য, এনআরসি-র সঙ্গে বিষয়টি মিলিয়ে দেখলে কেন্দ্রের আসল উদ্দেশ্য স্পষ্ট বোঝা যাবে।