গুয়াহাটি: অসমে সব সরকার পরিচালিত মাদ্রাসা, সংস্কৃত টোল বন্ধ করে দেওয়ার প্রস্তাবে সিলমোহর রাজ্য মন্ত্রিসভার। রাজ্য বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনেই এ ব্যাপারে বিল পেশ করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিষদীয় মন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারি। ২৮ ডিসেম্বর শুরু হচ্ছে অধিবেশন। তিনি বলেছেন, মাদ্রাসা ও সংস্কৃত ট্রোল সংক্রান্ত চলতি আইন বাতিল হবে। বিধানসভার পরের অধিবেশনেই নতুন বিল পেশ হচ্ছে। আজ অনুমোদিত প্রস্তাবে বলা হয়েছে, মাদ্রাসা ও সংস্কৃত ট্রোলের বিধি-বন্দোবস্ত বাতিল। আসন্ন অধিবেশনে আইন আসছে।
সম্প্রতি রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা প্রায় ৬০০ মাদ্রাসা বন্ধের পরিকল্পনা জানান। বলেন, আমরা ঠিক করেছি, এই প্রতিষ্ঠানগুলিকে সাধারণ শিক্ষাকেন্দ্রে পরিণত করা হবে। এবার ৬০০ মাদ্রাসা বন্ধ হবে। সেখানে আমরা আধুনিক শিক্ষাদানের প্রচলন করব। ৩০০ কোটি টাকা খরচ করব কেননা আমরা কাউকে কর্মচ্যুত করব না। পড়ুয়ারা নিজেরাই মাদ্রাসা শিক্ষার বিরোধিতা করছে।
শর্মার বক্তব্য়, অসমে হাই মাদ্রাসাগুলিতে একজন পড়ুয়া ইসলাম ও কোরানভিত্তিক বিষয় পড়ে ২০০ নম্বর তোলার সুযোগ পায়। নাগরিকদের কেবলমাত্র একটি অংশকে তাদের পবিত্র ধর্মীয় পুঁথি পড়ে নম্বর তোলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। সেখানেই আমার আপত্তি, কেননা একটা ভারসাম্য থাকা উচিত। তাহলে ভগবত গীতা বা বাইবেল পড়ারও অনুমতি থাকুক যাতে অন্য পড়ুয়ারাও ২০০ নম্বর তোলার সুযোগ পায়, নয়তো কোরান বাদ যাক। কিন্তু অসমে মিশ্র সংস্কৃতি বহাল থাকায় বাইবেল বা ভগবত গীতা চালু করা সহজ হবে না। আরও অনেক ছোট ছোট ধর্মীয় গোষ্ঠীও আছে। সুতরাং সমতা কায়েম করার সহজতম রাস্তা হল কোরানভিত্তিক বিষয়বস্তু বাদ দেওয়া।
প্রসঙ্গত, সরকারি অর্থে চলা মাদ্রাসাগুলি সরকারি স্কুলের মতোই। রাজ্য় শিক্ষা পর্ষদ অনুমোদিত সিলেবাসের সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই বিষয়বস্তু পড়ানো হয় সেখানে, তবে অতিরিক্ত দুটি বিষয় পড়তে হয়। আরবি ভাষা ও ধর্মতত্ত্ব।
শর্মা আরও বলেছিলেন, সংস্কৃত টোলগুলি কুমার ভাস্করবর্মা সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে তুলে দেওয়া হবে। সেগুলি গবেষণা, জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র হয়ে উঠবে যেখানে ভারতীয় সংস্কৃতি, সভ্যতা ও জাতীয়তাবাদ নিয়ে পড়াশোনা হবে।
মাদ্রাসা, টোল বন্ধ করে দেওয়ার নতুন নয় অসমে। গত ফেব্রুয়ারিতেই শর্মা বলেছিলেন, আমরা এমন পদক্ষেপ করতে চলেছি কেননা আরবি বা অন্য কোনও ভাষা, ধর্মীয় পুস্তক পড়ানো সরকারের দায়িত্ব হতে পারে না।
তিনি আরও বলেছিলেন, কেউ ধর্মশিক্ষা দিতে নিজের অর্থ ব্য়য় করলে কিছু বলার নেই, কিন্তু এর পিছনে সরকারি অর্থ খরচ করা যায় না। স্কুলে ভাগবত গীতা বা বাইবেল পড়াতে পারি না আমরা।