বাঁকুড়া: বাংলায় বদলও হবে, বদলাও হবে। বাঁকুড়ায় চা-চক্রে রাজ্য বিজেপি সহ সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক। তৃণমূলকে নিশানা করতে গিয়ে পুলিশকেও হুঁশিয়ারি দেন রাজু। ভোটের আগে এলাকাকে অশান্ত করার চেষ্টা চলছে। প্রতিক্রিয়া তৃণমূলের।

বিজেপি নেতা খুনের অভিযোগ উত্তপ্ত উত্তর ২৪ পরগনার হালিশহর। ঠিক এমন সময়ে বিজেপি-র রাজ্য সহ সভাপতির মুখে ফিরল বদল এবং বদলার কথা। রবিবার বাঁকুড়ার লালবাজারে ‘চায়ে পে চর্চা’ কর্মসূচিতে অংশ নেন বিজেপির রাঢ়বঙ্গ জোনের পর্যবেক্ষক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলকে আক্রমণ করতে গিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন রাজ্য বিজেপির সহ সভাপতি। পুলিশকেও হুঁশিয়ারি দেন। তিনি বলেন, ‘কিছু পুলিশ আধিকারিক তৃণমূলের হয়ে কাজ করছে। বিজেপি ক্ষমতায় এসে রাজ্যে গণতন্ত্র, ন্যায় ও আইনের প্রতিষ্ঠা করবে। আর সেই কাজে বাধা দিতে এলে যতো বড়ই 'আইএস-আইপিএস' তিনি হন তার 'উর্দি খুলে নেওয়া হবে।’

তৃণমূলের অভিযোগ, জঙ্গলমহলের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে অশান্ত করতে চাইছে বিজেপি। বাঁকুড়ার তৃণমূল জেলা সভাপতি শ্যামল সাঁতরা বলেন, ‘রাজ্যের নেতারা এসে বাঁকুড়ায় উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করছে।’

২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনেও বাঁকুড়ার সবকটি বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের একাধিপত্য ছিল। তবে গত লোকসভা নির্বাচনে ছবিটা একেবারে উল্টে যায়। বাঁকুড়া জেলার ২টি লোকসভা কেন্দ্রই দখল করে বিজেপি। জেলার ১২টি বিধানসভা কেন্দ্রেই তৃণমূলকে পিছনে ফেলে দেয় গেরুয়া ব্রিগেড। আগামী নির্বাচনে বিজেপি যেমন এই ব্যবধান ধরে রাখতে তৎপর, তেমনই মার্কশিটে বদল আনার চেষ্টা চালাচ্ছে তৃণমূলও। দুই দলের শীর্ষ নেতানেত্রীরা ইতিমধ্যেই বাঁকুড়া সফর সেরে ফেলেছেন। এই আবহে আগামী বিধানসভার যুদ্ধে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাঁকুড়া।

এর আগে বুধবার সকালে বাঁকুড়া শহরে সার্কিট হাউসের সামনে দাঁড়িয়ে চপ ভাজতে দেখা যায় বিজেপি নেতাকে। বড় বড় করে লেখা ছিল দোকানের নাম। টুকরো কাগজে দোকান মালিকের নাম লেখা নীলাদ্রিশেখর দানা। তিনি আসলে জেলা বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক। দোকানে দাঁড়িয়ে তিনিই চপ ভাজছিলেন। মাত্র ১০ টাকায় মুড়ির সঙ্গে বিক্রি হচ্ছিল একজোড়া চপ। শীতের সকালে চপ-মুড়ি কিনতে ভিড় করেন অনেকেই। বিজেপি নেতার এই উদ্যোগে সামিল হন দলীয় কর্মীরাও। তাঁদের বুকে সাঁটা কাগজে লেখা ছিল, কেন এই চপ বিক্রির উদ্যোগ। মুখ্যমন্ত্রীর কর্মসংস্থানের দাবি ও রাজ্যের শিল্প সম্ভাবনাকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। বাঁকুড়ার বিজেপি সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী চপ শিল্পের কথা বলছেন। এখানে তো শিল্প নেই, তাই চপ-মুড়ির দোকান দিয়েছি, বিক্রি করছি।’