গুয়াহাটি: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিক্ষোভের আঁচ প্রথম ছড়িয়ে পড়ে উত্তর-পূর্ব ভারত থেকেই। 'এই আইন চালু হলে বিপন্ন হতে পারে তাঁদের সংষ্কৃতি', এই আশঙ্কাতেই প্রথম বিক্ষোভ দানা বাঁধে। তবে সিএএ প্রণয়ন হলে অসমের ভাষা, সংষ্কৃতি কোনও কিছুই আঘাত পাবে না, বলে আশ্বাস দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এই পরিস্থিতিতে অসম বিধানসভা সিদ্ধান্ত নিল, কেন্দ্রের কাছে তাঁরা অসমিয়া ভাষাকেই রাজ্যের ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আবেদন জানাবে।
অসমের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, দেশের প্রতিটি রাজ্যই মূলত এক-একটি ভাষার ভিত্তিতে তৈরি হয়। অনুপ্রবেশের জন্যই অনেকে অন্য ভাষায় কথা বলেন। তাই যে কোনও রাজ্যই যে ভাষার মানুষদের নিয়ে প্রথমে তৈরি হয়েছে, সেই ভাষাটিকেই রাজ্য-ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।
পরে একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অসম মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারকে প্রস্তাব দেওয়া হবে, যেন ভারতের সংবিধানের ৩৪৫ নম্বর অনুচ্ছেদটি সংশোধন করে "বরাক উপত্যকা, বিটিএডি অঞ্চল এবং পার্বত্য জেলাগুলি বাদে অসমিয়য়াকে অসমের রাজ্য ভাষা হিসাবে ঘোষণা করা হয়।"
হিমন্ত বিশ্ব শর্মা আরও বলেন, "আমরা পরবর্তী বিধানসভা অধিবেশনে আইন নিয়ে আসব, যাতে সমস্ত ইংরেজি এবং অন্যান্য মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অসমিয়া ভাষাকে বাধ্যতামূলক বিষয় হিসাবে রাখা হয়। তবে, এই আইন পার্বত্য জেলা, বিটিএডি, বোরো অধ্যুষিত অঞ্চল এবং বরাক উপত্যকার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।"
ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, "মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে উপজাতি স্বায়ত্তশাসিত কাউন্সিল, মাইসিং, রাভা, সোনোয়াল কাছারি, থেঙ্গাল কাছারি, দেওরে, তিওয়াকে সাংবিধানিক মর্যাদা হতে পারে, যাতে তারা কেন্দ্রীয় ও রাজ্য উভয় সরকারের থেকে তহবিল পেতে পারে।"
তাছাড়াও কোচ রাজবংশী সম্প্রদায়ের (কামতপুর স্বায়ত্তশাসিত কাউন্সিল) জন্য একটি নতুন স্বায়ত্তশাসিত কাউন্সিল গঠন করার কথা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়। বলা হয়েছে, অসমের ভূমিপুত্রদের ভূমির অধিকার রক্ষার জন্য বিধানসভার পরবর্তী অধিবেশনে একটি বিল উপস্থাপন করা হবে। যার নাম হবে অসমের ঐতিহ্য সংরক্ষণ বিল।