নয়াদিল্লি: পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোট। সবকটিতেই পর্যুদস্ত হাতশিবির। হাতে ছিল একমাত্র পঞ্জাব। সেখানেও কার্যত ধুয়েমুছে সাফ কংগ্রেস। ভোটের ফল প্রায় নিশ্চিত হতেই টুইটে বার্তা দিলেন রাহুল গাঁধী। টুইটে তিনি বলেছেন, 'জনগণের রায় মাথা পেতে নিচ্ছি। যাঁরা জয়ী হয়েছেন তাঁদের অনেক শুভেচ্ছা। সমস্ত কংগ্রেস কর্মী ও সমর্থকদের তাঁদের কঠোর পরিশ্রমের জন্য ধন্যবাদ। এই ফল থেকে শিক্ষা নিয়ে ভারতের নাগরিকদের সঙ্গে কাজ করবে কংগ্রেস।'


 






এ বারের নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশকে পাখির চোখ করে নেমেছিল কংগ্রেস। উত্তরপ্রদেশের জন্য একাধিক প্রতিশ্রুতির বন্যা দিয়ে প্রচার করেছিল হাতশিবির। নেতৃত্বে ছিলেন রাহুল গাঁধী এবং প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। কিন্তু তারপরেও মুখ থুবড়ে পড়ল কংগ্রেস। কৃষক আন্দোলনে প্রথম থেকেই সমর্থন করলেও, ইভিএমে তার কোনও ছাপই পড়েনি। এমনকি লখিমপুর, হাথরসের মতো বিতর্কিত জায়গাতেও একচেটিয়াভাবে ভাল ফল করেছে বিজেপি। সবমিলিয়ে উত্তরপ্রদেশে দুই সংখ্যার আসনেও পৌঁছতে পারেনি হাতশিবির। 


২০১৪ সালের পর থেকে একের পর এক রাজ্য হাতছাড়া হয়েছে কংগ্রেসের। সাকুল্যে তিনটি রাজ্যে ছিল কংগ্রেস সরকার, তার মধ্যে ছিল পঞ্জাবও। এদিনের পর সেটিও তাদের হাতছাড়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, পঞ্জাবে কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রীও ভোটে দাঁড়িয়ে হেরেছেন। হেরেছেন কংগ্রেস নেতা নভোজ্যোত সিং সিধুও। পঞ্জাবের একের পর এক কংগ্রেস নেতা ভোটে পর্যুদস্ত হয়েছেন।


গোয়াতেও ভাল ফলের আশা করেছিল কংগ্রেস। সেখানেও আশাহত হতে হয়েছে রাহুল গাঁধীর দলের। মনিপুর, উত্তরাখন্ডেও জয়ের ধারকাছ দিয়ে যায়নি কংগ্রেস। গোয়া ভোটের আগে থেকেই পর্যুদস্ত হয়েছে কংগ্রেস শিবির। একের পর এক নেতা দল ছেড়েছেন। সব মিলিয়ে কংগ্রেস যে ভাল ফল করতে পারে এমন কোনও সম্ভাবনাই গোড়া থেকে দেখতে পারেননি কোনও বিশেষজ্ঞ। 


ভোটের আগে প্রচারে গেলেও দলের সংগঠন নিয়ে কোনও মাথাই ঘামাননি রাহুল গাঁধী। উঠেছিল এমন অভিযোগও। দলের এমন হারের পর রাহুলের টুইটবার্তা কংগ্রেস কর্মীদের মনোবল কতটা বাড়াতে পারবে তা নিয়ে সন্দিহান রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। 


২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচন। তার আগে ভারতের একাধিক রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। এতগুলি রাজ্যে হারের ফলে সেখানে কতটা ঘুরে দাঁড়াতে পারবে কংগ্রেস? আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগেও কীভাবে ঘর গোছাবে হাতশিবির। এদিনের ভোটের ফলের পরে এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে কংগ্রেস থেকে দেশের রাজনৈতিক মহল--সবার অন্দরেই। 


আরও পড়ুন: জিয়নকাঠির ছোঁয়া অধরাই, কংগ্রেসের ভরাডুবি আটকাতে পারলেন না রাহুল-প্রিয়ঙ্কাও