নয়াদিল্লি: সংরক্ষণ নীতি সংশোধনের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু বাংলাদেশে আন্দোলন থামার ইঙ্গিত মিলছে না এখনই। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশকে স্বাগত জানালেও, আন্দোলন থেকে সরছেন না পড়ুয়ারা। তাঁরা জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশ মতো শেখ হাসিনার সরকার আগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করুক, তার পর হটবেন তাঁরা। আর সেই আবহেই বাংলাদেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৬১ হয়ে গিয়েছে। (Bangladesh Anti Quota Protests)


রবিবার বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট সংরক্ষণ নীতিতে সংশোধনের নির্দেশ দিয়েছে। ১৯৭১-এর যুদ্ধে অংশ নেওয়া পরিবারদের সংরক্ষণ কমিয়ে ৫ শতাংশ এবং আরও ২ শতাংশ সংরক্ষণ রেখে ৯৩ শতাংশ শূন্যপদেই মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে। আদালতের এই রায়কে পড়ুয়ারা স্বাগত জানালেও আন্দোলন থিতিয়ে আসার কোনও লক্ষণ নেই। (Bangladesh Anti Quota Movement)


কারণ আন্দোলন শুধুমাত্র সংরক্ষণ বিরোধী হয়ে থেমে নেই, বরং এর সঙ্গে বৃহত্তর স্বার্থ জড়িয়ে গিয়েছে বলে দাবি করছেন আন্দোলনকারীদের একাংশ। তাঁদের দাবি, দেশে বেকারত্ব চরম আকারপ ধারণ করেছে। দেশের যুবসমাজ, যা মোট জনসংখ্য়ার এক পঞ্চমাংশ, তাঁদের মধ্যে ১ কোটি ৮০ লক্ষের বেশি যুবক-যুবতীই কর্মহীন। টানা চতুর্থবার ক্ষমতায় ফিরেও শেখ হাসিনা সরকার বেকারত্ব ঘোচানোর জন্য কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ।


আরও পড়ুন: Bangladesh Supreme Court: শতাধিক মৃত্যুর পর সংরক্ষণ নিয়ে বড় রায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের, কোটা ব্যবস্থায় সংস্কারের নির্দেশ


আন্দোলনকারীদের দাবি, দেশের জনসংখ্যার বড় অংশ বেকার হলেও, দিন দিন মূল্যবৃদ্ধি চরম আকার ধারণ করছে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, গত বছর আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারের কাছ থেকে ৪৭০ কোটি ডলার ধার চাইতে হয় সরকারকে। আমদানিকৃত তেল এবং গ্যাসের দামও মেটানো যাচ্ছে না। সঞ্চিত বিদেশি মুদ্রাও তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। তাই সরকার বিরোধী আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীদের একাংশ। 


আন্দোলনকারীরা পড়ুয়ারা এই মুহূর্তে বন্দি ছাত্রদের মুক্তির দাবি জানাচ্ছেন। যদিও পুলিশের দাবি, কয়েক জন আন্দোলনকারী নিখোঁজ হয়ে গেলেও, তাদের কোনও ভূমিকা নেই এতে। যদিও খবর পাওয়া যাচ্ছে যে, প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি (BNP)র ৭০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এখনও পর্যন্ত। পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর থেকে এক ছাত্রনেতা, বিরোধী দলের এক নেতার কোনও খোঁজ নেই। এর আগেও বিচার বহির্ভূত ভাবে বন্দিদের খুন করার অভিযোগ উঠেছে হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে। তাই প্রমাদ গুনছেন আন্দোলনকারীরা।


২৪ বছর বয়সি হাসিবুল শেখ বিদেশি সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলেন। তাঁর বক্তব্য, "পড়ুয়াদের অধিকারের মধ্যে আর থেমে নেই আন্দোলন। আমাদের একটাই দাবি, সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে।" কিন্তু হতাহতের আসল সংখ্যা কত, জেলে কতজন বন্দি রয়েছে, এখনও পর্যন্ত নির্দিষ্ট ভাবে জানা যায়নি। কারণ টেলিকমিউনশন্স সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ করে রেখেছে বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে কোনও খবরই মিলছে না, যার তীব্র নিন্দা করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।