ঢাকা: অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলেও, বিক্ষোভের আঁচ এখনও রয়েছে। বিক্ষোভকারীদের দাবি মেনে এবার পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলেন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। শনিবার সুপ্রিম কোর্ট ঘিরে বিক্ষোভ দেখান আন্দোলনকারীরাষ প্রধান বিচারপতি পদত্যাগ না করলে বিচারপতিদের বাড়িতে যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা। এর পরই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন প্রধান বিচাপতি ওবায়দুল। বিচারপতিদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন তিনি। রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিনকে বিকেলে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন। (Bangladesh Chief Justice Resignation)


প্রধান বিচারপতি-সহ আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পদত্যাগের দাবিতে আজ সকাল- থেকে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বর্ধিত ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখান আন্দোলনকারীরা। দুপুর দেড়টা নাগাদ প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা জানান। এর পর দুপুর দু’টো নাগাদ আদালত চত্বর থেকে সরে যান আন্দোলনকারীরা। আপিল বিভাগের বিচারপতিরাও আজ পদত্যাগ করবেন বলে জানা গিয়েছে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রে। (Bangladesh Situation)


আন্দোলনকারীদের তরফে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এদিন জানান, গণ আন্দোলনে পদত্যাগের দাবি উঠলে, সেটিকে সম্মান জানানোর বিষয়টি প্রধান বিচারপতি বুঝতে পারবেন বলে প্রত্যাশা তাঁদের। এর পরই নীতিগত কারণে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল। ফলে আজ ভার্চুয়াল মাধ্যমে ফুল কোর্ট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও, তা হয়নি। আন্দোলনকারীদের নিঃশর্ত পদত্যাগের দাবি তিনি মেনে নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।


সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলন চলাকালীন গত ৪ জুলাই প্রধান বিচারপতি ওবায়দুলের মন্তব্য ঘিরেই বিতর্কের সূচনা। শুনানিতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, “রাস্তায় এত আন্দোলন কীসের? আন্দোলনকারীরা কি চাপ দিয়ে হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের রায় পরিবর্তন করবেন?” ওই মন্তব্যের জেরে তাঁকে ফ্যাসিবাদী সরকারের মদতপ্রাপ্ত, অপকর্মে শামিল বলে উল্লেখ করেন আন্দোলনকারীরা। সেই থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে জনরোষ জমা হচ্ছিল। 


এদিন ফুল কোর্ট ডাকা হলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা তথা অন্তর্বর্তী সরকারে শামিল সজীব ভুঁইয়া এবং আসিফ মহম্মদ সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান, পরাজিত শক্তির কোনও রকম ষড়যন্ত্র বরদাস্ত করবেন না তাঁরা। সেই মতোই প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের দাবিতে আদালত ঘেরাও কর্মসূচি শুরু হয় সকাল ১০টায়। আদালতের বাইরে ওঠে স্লোগান। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পদত্যাগের কথা জানালেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল।


গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন ওবায়দুল। ২০২৬ সালের ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত কার্যকালের মেয়াদ ছিল তাঁর। নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের সার্চ কমিটির প্রধানও ছিলেন তিনি। তাঁর ভাই সাজ্জাদুল হাসান শেখ হাসিনার দল আওয়ামি লিগের সাংসদ ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রাক্তন সিনিয়র সচিবও।


আরও পড়ুন: Sajeeb Wazed Joy: নোবেলজয়ী ইউনূসের সরকার অসাংবিধানিক, আওয়ামি লিগ-কে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত তিনি, জানালেন হাসিনা-পুত্র