কলকাতা: বাংলাদেশে অশান্তি কমার লক্ষণ নেই। খুন, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেই চলেছে। সেই আবহেই পেট্রাপোল সীমান্ত হয়ে ভারতে ঢুকতে দেখা গেল বাংলাদেশের নাগরিকদের। আপাতত আত্মীয়দের বাড়িতে থাকবেন বলে জানিয়েছেন কেউ কেউ। এমনকি ভারত থেকে যাঁরা বাংলাদেশ গিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকেও ফিরে আসছেন। (Bangladesh Situation)

Continues below advertisement

বাংলাদেশে নাগরিক যাঁরা পেট্রাপোল সীমান্ত হয়ে ঢুকছেন, তাঁদের অনেকেরই চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ। জানাচ্ছেন, বাংলাদেশেও থাকতে পারছেন না, আবার ভারতেও থাকার উপায় নেই। নাগরিকত্ব কী ভাবে পাবেন জানেন না। কোথায় যাবেন বুঝতে পারছেন না তাঁরা, অসহায় বোধ করছেন। (Bangladesh News)

বাংলাদেশে গতবছর শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। আর সেই থেকেই লাগাতার অশান্তি, হিংসার খবর সামনে আসছে। বাংলাদেশের নাগরিকরা জানাচ্ছেন, সুস্থ জীবনযাপনের সুযোগ আর নেই। ব্যবসা চলছেন না, কাজে বেরোতে পারছেন না, ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতেও ভয় পাচ্ছেন। মহিলারাও ভয়ে আছেন। বাইরে মেপে কথা বলতে হচ্ছে। বাক স্বাধীনতা নেই। 

Continues below advertisement

রবিবার পেট্রাপোল হয়ে দেশে ফেরেন নেপালচন্দ্র বিশ্বাস। ১৯৯২ সালে সপরিবারে ভারতে চলে আসেন তিনি। বাবার বন্ধু ফিজু আহমেদকে খুঁজতে সম্প্রতি বাংলাদেশ গিয়েছিলেন। দেশে ফিরে বলেন, "আগের মতো নেই। এখন পরিবর্তন হয়েছে।" বাংলাদেশের বাসিন্দা শ্যামলকুমার ভদ্রর বাড়ি রাজবাড়ি এলাকায়। তিনি হিপ জয়েন্ট অস্ত্রোপচার করাতে এসেছেন। তবে কথা বলতে ইতস্তত বোধ করেন তিনি। বলেন, "শিয়ালদায় চিকিৎসা করাতে এসেছি। আর কিছু বলতে চাই না।"

যদিও ঢাকার বাসিন্দা শান্তিরঞ্জন সাহা যদিও কোনও রাখঢাক করেননি। তিনি বলেন, "খালি আল্লা হু আকবর দেয়। জোর জুলুম করছে। মিছিল করছে খালি। রাস্তা আটকে দিচ্ছে। দোকানবাজার অর্ধেক খোলা, অর্ধেক নয়। হিন্দুরা আতঙ্কে রয়েছে।" শান্তিরঞ্জন রানাঘাটে এক আত্মীয়ের বাড়িতে উঠেছেন। স্ত্রী আগে থেকেই রয়েছেন এখানে। কিন্তু ফিরতে চাইছেন না বলে জানিয়েছেন। শান্তিরঞ্জনের বক্তব্য, "ভয় হচ্ছে। গেলে জীবন বাঁচবে না। কষ্ট করে কোনও রকমে, চোরের মতো রয়েছেন। রাস্তাঘাটে সাবধানে চলতে হবে।"

পেট্রাপোল সীমান্ত অঞ্চলে যাঁরা অটো, গাড়ি চালান, তাঁরা জানিয়েছেন, আগে প্রচুর মানুষ আসতেন। এলাকা পুরো গমগম করত। এখন টোটোয় যাত্রীই হয় না। আগে যেখানে দিনে ১০ হাজার লোক আসতেন, এখন সেই সংখ্যা কমে হয়েছে ৮০০-৯০০। জীবন জীবিকা সঙ্কটের মুখে। বেঁচে থাকাই দুষ্কর হয়ে উঠেছে।