কলকাতা: সেই বুধবার দুপুর। একবছর আগে ২০ মে প্রকৃতির রূদ্ররূপ দেখিয়েছিল আমফান। সে ছিল এক বুধবার। এবার সেই বুধবারেই রাজ্যে আছড়ে পড়তে চলেছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। একের পর এক ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতবিক্ষত উপকূল এলাকার বাসিন্দারা এখন আতঙ্কের প্রহর গুনছে। কারণ, আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই ঘূর্ণিঝড় আয়লা কিংবা আমফানের থেকে কোনও অংশে কম শক্তিশালী নয়। 


২০০৯ সালের ২৫ মে আছড়ে পড়া আয়লার সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় একশো কুড়ি কিলোমিটার। ২০১৯-এর ৩ ও ৪ মে ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে আঘাত হানা ফণীর সর্বোচ্চ গতি ছিল ঘণ্টায় ১৫০ থেকে ১৭৫ কিলোমিটার। ২০২০-র ২০ মে আছড়ে পড়া আমফানের সর্বোচ্চ গতি ছিল ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ইয়াসের সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার। 


আয়লা কিংবা আমফান এরাজ্যে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি করেছিল, সেই স্মৃতি আজও টাটকা। আয়লায় ভারত ও বাংলাদেশ মিলিয়ে ৩৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। প্রায় ৭ ফুট উঁচু নোনা জলে ঢেউ ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল ঘরবাড়ি। মন্দারমণি কোস্টাল থানা এলাকার জলদা গ্রামে সেবার বাঁধ ভেঙে গিয়েছিল। দশ বছর পর ২০১৯-এ ফণীর ছোবলে তছনছ হয়ে গিয়েছিল ওড়িশা উপকূল। ওড়িশায় মৃত্যু হয় ৩৩ জনের। ফণী দিঘায় আঘাত হানলেও গতিবেগ ছিল কিছুটা কম। তবে সেদিন সন্ধেয় উথালপাতাল হয়েছিল সমুদ্র। 


উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি হাসনাবাদ, বসিরহাটে চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়, ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবা, জয়নগর ও কুলতলিতে সবজি চাষ ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে। এছাড়া হুগলির চারটি মহকুমায় এবং পূর্ব বর্ধমানেও ফসলের ক্ষতি হয়েছিল। এর কয়েকমাস যেতে না যেতেই ২০১৯-এর নভেম্বরেই আসে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল। সেই ঝড়েও সবথেকে বেশি ক্ষতি হয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলবর্তী এলাকাগুলি। তারপর গতবছরের ২০ মে আসে আমফান। এই ঘূর্ণিঝড়ে ঘর হারানো, দুই ২৪ পরগনার উপকূল এলাকার বহু মানুষ আজও বাড়িটুকু দাঁড় করাতে পারেননি। তার মধ্যেই আবার ধেয়ে আসছে ইয়াস।