কলকাতা: তল্লাশি চলাকালীন এক চিরকূটে নাম পেয়েই তদন্তের মোড় ঘুরে যায় বলে দাবি করেছিলেন তদন্তকারীরা। তার পর থেকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (SSC Scam)  পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) এবং অর্পিতা মুখোপাধ্য়ায়কে (Arpita mukherjee) নিয়ে উত্তাল গোটা রাজ্য। অর্পিতার বাড়ি থেকে উদ্ধার কোটি কোটি টাকা, গহনা, দু'জনের যৌথ সম্পত্তি, এ সবের আখ্যান বার বার উঠে এসেছে তদন্তকারী সংস্থা ইডি মারফত (Enforcement Directorate/ED)। এ বার আরও চাঞ্চল্য়কর দাবি করল তারা। অর্পিতার বোনের চাকরির ব্যবস্থাও পার্থ করে দিয়েছিলেন বলে দাবি তদন্তকারীদের। 


পার্থ-অর্পিতাকে নিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি ইডি-র


স্কুল শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে আদালতে চার্জশিট জমা করেছেন তদন্তকারীরা। তাতে পার্থ এবং অর্পিতার সম্পর্কের কথাও উঠে এসেছে। আর তাতেই পার্থর দৌলতে অর্পিতার বোনের চাকরি হয় বলে দাবি করা হয়েছে। আদালতে জমা দেওয়া ওই চার্জশিটে ইডি-র দাবি, সাধারণ চাকরিপ্রার্থীদের বঞ্চিত করে অর্পিতার বোনের চাকরির ব্যবস্থা করে দেন পার্থ। উচ্চশিক্ষা দফতরে গ্রুপ ডি বিভাগে চাকরি করেন তিনি।


শুধু তাই নয়, প্রয়াত স্ত্রীর নামে থাকা একটি সংস্থার শেয়ারও পার্থ অর্পিতার নামে ট্রান্সফার করেন বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। আদালতে তাঁরা জানিয়েছেন, প্রয়াত বাবলি চট্টোপাধ্যায়ের নামে অনন্ত টেক্সটফ্যাব প্রাইভেট লিমিটেড-এ শেয়ার ছিল। তার অধিকাংশ শেয়ারই পরে অর্পিতার নামে ট্রান্সফার করা হয়। বলা হয়েছিল, পার্থর মেয়ে যদি পরে ওই শেয়ার নিতে চান, তাহলে তাঁকে তা দিয়ে দেওয়া হবে। 


আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: 'বদলা নয় বলেই জেনেশুনে ওদের গায়ে হাত দিইনি’, পুজো উদ্বোধনে বামেদের আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রীর


ইডি চার্জশিটে আরও দাবি করেছে যে, রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন চাকরি বিক্রিতে সরাসরি যুক্ত ছিলেন পার্থ। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, চারটি সংস্থাকে সামনে রেখে চাকরি বিক্রির কালো টাকা সাদা করার চেষ্টা হয়। পিংলায় পার্থর প্রয়াত স্ত্রীর নামে যে বিশাল স্কুল রয়েছে, তার চেয়ারম্য়ান তাঁদের জামাতা কল্যাণময় ভট্টাচার্য। ওই স্কুল তৈরির টাকার উৎস ঘিরেও শুরু হয়েছে তদন্ত। আদালতে জমা দেওয়া চার্জশিটে ইডি জানিয়েছে, ১৫ কোটি টাকা খরচ করে বানানো হয়েছিল ওই স্কুল। কিন্তু খাতায় কলমে ৪ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা খরচ দেখানো হয়।


প্রয়াত স্ত্রীর নামের শেয়ারও হস্তান্তর!


চার্জশিটে আরও দাবি করা হয়েছে, 'বান্ধবী' অর্পিতা-র কেনাকাটার বিল মেটাতেন পার্থ। তাইল্যান্ডের ফুকেতে দু'জনে একসঙ্গে ঘুরতেও গিয়েছিলেন বলে দাবি তদন্তকারীদের।  তাঁরা জানিয়েছেন, নিয়োগ দুর্নীতি একটি বড় আকারের গণ-দুর্নীতি।  চাকরির জন্য আবেদন করতেন সাংসদ, বিধায়ক, কাউন্সিলররা। অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার ডায়েরিতে সেই সংক্রান্ত তথ্য রয়েছে। যদিও ওই ডায়েরিতে কী আছে তা জানেন না বলে দাবি করেছেন পার্থ।