কলকাতা: ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্পকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ রেশন ডিলারদের একাংশ। ‘এই প্রকল্প কেন্দ্রীয় আইনের পরিপন্থী। প্রকল্পের কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি। বাড়ি গিয়ে রেশন দেওয়া আইনবিরুদ্ধ। এর জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো রেশন ডিলারদের নেই’, দাবি মামলাকারীদের।


‘বাড়ি গিয়ে রেশন দিতে খরচ বহন করতে হবে ডিলারদের। গাড়ির খরচ, প্রচারের খরচ এবং সংরক্ষণের খরচ বহন করতে হবে,’ জানিয়েছে রাজ্য সরকার। পাল্টা রেশন ডিলারদের দাবি, ‘এই বিপুল খরচ তাঁরা বহন করতে পারবেন না। দিল্লিতেও এই ধরনের প্রকল্প আনার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্র অনুমোদন দেয়নি।’


‘প্রাপকের সুবিধার্থে তাঁরা আইন সংস্কার করতে পারেন। এতে ডিলারের অধিকার ক্ষুণ্ণ হয় না। রাজ্যের নির্দেশ মেনে চলতে রেশন ডিলাররা বাধ্য। পরিবহণ এবং অন্যান্য খরচ বহন করতে সাহায্য করছে রাজ্যের। এটি একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্প, শুধু সেপ্টেম্বর মাসের জন্য,’ পাল্টা দাবি রাজ্যের।


কাল ফের এই মামলার শুনানি।


গ্রাহকদের দরজায় রেশন পৌঁছে দেওয়ার প্রকল্প পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হওয়ার কথা ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে। কিন্তু তার ঠিক মুখে ‘দুয়ারে রেশন’-এর পরিকাঠামো প্রস্তুত নেই বলে ফের সরব হল রেশন ডিলারদের সংগঠন। ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্পে যা শর্ত দেওয়া হয়েছে তাতেই আপত্তি ডিলার সংগঠনের। তাঁদের দাবি, কুইন্টাল পিছু ২০০ টাকা ভর্তুকির পাশাপাশি, ৪০ টাকা পার কুইন্ট্যাল প্যাকেজিং চার্জ দেওয়া হোক। ১৫ দিন দোকান থেকে নেওয়া, পরের ১৫ দিন বাড়িতে রেশন পৌঁছনোর ব্যবস্থা চালু হোক। বাড়ি গিয়ে রেশন দেওয়ার জন্য ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস দিক সরকার। গাড়ির ব্যবস্থাও সরকারই করুক।


বর্তমানে রেশন সামগ্রীর কুইন্টাল প্রতি ডিলারদের ৭৫ টাকা কমিশন দেয় রাজ্য সরকার। তবে ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্পে তা বাড়িয়ে ১৫০ টাকা করার ঘোষণা করা হয়েছে। যদিও ডিলার সংগঠনের একাংশের দাবি, কুইন্টাল প্রতি ২০০ টাকা কমিশন দিতে হবে তাঁদের। রেশন ডিলার সংগঠনদের অন্য একটি অংশ আবার জানিয়েছে, রাজ্য সরকারের শর্ত মেনেই বাড়ি বাড়ি রেশন পৌঁছে দিতে প্রস্তুত।


রাজ্যে মোট রেশন ডিলার রয়েছেন ২০ হাজার ২৮৬ জন। তার ১৫ শতাংশ, অর্থাৎ ৩ হাজার ৪২ জনকে নিয়ে ‘দুয়ারে রেশন’এর পাইলট প্রজেক্ট শুরু করতে চাইছে রাজ্য সরকার। এখন ১৫ সেপ্টেম্বর সরকারি প্রকল্পে কতজন অংশগ্রহণ করেন, সেটাই দেখার।