কলকাতা : দিল্লি সফরে গিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। দিল্লিতে গিয়ে কয়লামন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশীর সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। এই ইস্যুতে এবার সরব হলেন বাম নেতা বিমান বসু ।
তিনি বললেন, ‘রাজ্যপাল তাঁর সাংবিধানিক সীমা লঙ্ঘন করে কাজ করছেন। তিনি এর আগে উত্তরবঙ্গে গেলেন। সব জায়গায় শুধু বিজেপি নেতাদের সঙ্গে নিয়েই ঘুরছেন। এটা তো ঠিক না। উনি কোথাও যেতে পারেন না, তা বলছি না। যেতে পারেন। কিন্তু, বিজেপি নেতাদের নিয়ে উনি যাবেন কীসের জন্য ? উনি বিজেপির লোক নন। এটা কোনও রাজ্যপালের ভূমিকা হতে পারে না।
রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত অব্যাহত। এরই মধ্যে গতকাল দিল্লি যাওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেখা রাজ্যপালের চিঠি ঘিরে নবান্ন ও রাজভবনের সংঘাত প্রকাশ্যে এসেছে। দিল্লি সফরের ঠিক মুখে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণভাবে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ান রাজ্যপাল।
মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা কড়া চিঠিতে জগদীপ ধনকড় অভিযোগ করেন, বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসা, রক্তপাত, মানবাধিকার লঙ্ঘন থামছে না। নারী নির্যাতন, বিরোধীদের সম্পত্তি ধ্বংস হয়েই চলছে। অথচ, এই নিয়ে আপনি আশ্চর্যজনকভাবে নীরব এবং নিষ্ক্রিয়। রাজ্যপালের অভিযোগ, বারবার দৃষ্টি আকর্ষণের পরেও, মুখ্যমন্ত্রী মন্ত্রিসভায় একদিনও এ ব্যাপারে আলোচনা করেননি।
রাজ্যপালের চিঠির কড়া জবাব দিয়েছে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর। ট্যুইটে বলা হয়েছে, যাবতীয় নিয়ম-নীতি ভেঙে মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠি জনসমক্ষে এনেছেন রাজ্যপাল। এরইসঙ্গে ট্যুইট করে গণমাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। চিঠির বিষয়বস্তু প্রকৃত ঘটনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এবং মনগড়া। চিঠিতে যেভাবে বিকৃত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে তাতে রাজ্য সরকার স্তম্ভিত।
এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপালকে কটাক্ষ করে ট্যুইট করেন মহুয়া মৈত্র। এর আগে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগে ট্যুইট করেছিলেন মহুয়া মৈত্র। এর জবাবে পাল্টা ট্যুইট করে রাজ্যপাল বলেছিলেন, ওএসডি পদে ৬ আত্মীয়কে নিয়োগের কথা তথ্যগতভাবে ভুল। এর জবাবে মহুয়া প্রশ্ন তুলেছিলেন, কীভাবে, কোন পথে রাজভবনে ঢুকলেন তাঁরা?
এদিকে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতের আবহে দিলীপ ঘোষ বলেছেন, রাজ্যপালকে হজম করতে পারছে না, আটকাতে পারছে না। তৃণমূল যাঁদের কণ্ঠস্বর বন্ধের চেষ্টা করছে, তাঁদের দাবি তুলে ধরছেন রাজ্যপাল। যদিও এপ্রসঙ্গে তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় বলেন, "রাজ্যপালের চেহারা ঝুঁকে রয়েছে এবং তা বিজেপির দিকে ঝোঁকা। ওঁর বুক চিতিয়ে লড়াই করার মতো শারীরিক গঠন নয়। রাজ্যপাল যেদিন থেকে বাংলায় এসেছেন, সেদিন থেকেই তিনি একটি রাজনৈতিক দলের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছেন।"