নয়াদিল্লি: 'পীড়িতকে অপরাধী বলে দাগিয়ে দেবেন না', গলায় ঝোলানো প্ল্যাকার্ডের বক্তব্য স্পষ্ট। মহুয়া মৈত্রের (Expelled TMC MP Mahua Moitra) বহিষ্কারের পর এই 'প্রতিবাদী-প্ল্যাকার্ড' আরও নজর কেড়েছে। শুধু সংসদের এক সদস্যকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে বহিষ্কারের অভিযোগ নয়, বিএসপি সাংসদ দানিশ আলির (BSP MP Danish Ali Placard) মতে, 'এই পোস্টার ঝুলিয়েছি কারণ কমিটি আমার কথাও সুপারিশে বলেছে। ওঁকে ন্যায়বিচার দিতে চাই।' তাঁর আরও প্রশ্ন, 'গোটা বিশ্ব দেখেছে, রমেশ বিধুরি কী আচরণ করেছিলেন। তখন সংসদের আদর্শ আচরণ নিয়ে কিছু মনে হয়নি? এখন কেন? এসব কী?'
নজরে বিএসএপি সাংসদ...
মহুয়া মৈত্রর হয়ে সংসদের এথিক্স কমিটির ভোটাভুটিতে পাশে থাকতে দেখা গিয়েছিল এই বিএসপি সাংসদকে। নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে, ভোটাভুটির পর, খসড়া রিপোর্টে কমিটির সিলমোহর আসতেই দানিশ বলেছিলেন, 'দেশে দু'রকমের আইন চলতে পারে না। লাগাতার ধারা ২৭৫ লঙ্ঘন করে চলেছেন নীতি কমিটির চেয়ারপার্সন। আমরা শুধু একটাই কথা বলতে পারি, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হয়েছি, আগামী দিনেও তাই করব। আমাদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই।' পুরো প্রক্রিয়ায় পদ্ধতিগত ত্রুটির কথা উত্থাপনও করেছিলেন তিনি। যদিও নীতি কমিটির চেয়ারপার্সন রমেশ সোনকার দাবি করেন, সমস্ত নিয়ম মেনেই ভোটাভুটি হয়েছে।
তবে স্রেফ কৃষ্ণনগরের সদ্য বহিষ্কৃত সাংসদের হয়ে সরব হওয়ার জন্য নয়, কয়েক মাস আগে অন্য একটি বিতর্কে শিরোনামে আসে দানিশ আলির নাম। ওই ঘটনায় অভিযোগের তির ছিল বিজেপি সাংসদ রমেশ বিধুরির দিকে। সতীর্থ বিএসপি সাংসদের উদ্দেশে অশ্লীল গালিগালাজ করেছেন রমেশ, এমন অভিযোগে তোলপাড় হয়ে যায় সাংসদ।
অভিযুক্ত বিজেপি সাংসদ...
গত সেপ্টেম্বরের ওই ঘটনায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিল গেরুয়া শিবির। পশ্চিমবঙ্গের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা চিঠি লিখে দাবি করেন, ঘটনাটি খতিয়ে দেখার জন্য 'প্রিভিলেজ কমিটি'-তে পাঠানো উচিত। প্রশ্ন ওঠে, সংসদে দাঁড়িয়ে সতীর্থ বিএসপি সাংসদ উদ্দেশে 'আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার' সত্ত্বেও কেন সাসপেন্ড করা হবে না বিজেপি সাংসদ রমেশ বিধুরিকে? তীব্র সমালোচনা ও অস্বস্তির মুখে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার নির্দেশে সাংসদ বিধুরিকে শো-কজ নোটিস ধরায় গেরুয়া শিবির। লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা অভিযুক্ত বিজেপি সাংসদকে এই আচরণের জন্য কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও দেন। ক্ষমা চান কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। কিন্তু বিরোধী শিবিরের বক্তব্য ছিল, এই ক্ষমা চাওয়া যথেষ্ট নয়। কয়েক মাস তীব্র সমালোচনার পর, গত কাল ক্ষমা চেয়েছেন অভিযুক্ত সাংসদ। কিন্তু দানিশের প্রশ্নের মর্মার্থ স্পষ্ট। মহুয়াকে বহিষ্কার করা হলে রমেশ বিধুরির ক্ষেত্রে কেন কিছু নয়?
আরও পড়ুন:'ভগবানকে নিয়ে অপমানজনক শব্দ নয়', মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজে স্মৃতির শহরে শুভেন্দু