নয়াদিল্লি: আয়ুষ্মান ভারত থেকে সড়ক নির্মাণ প্রকল্প, অনিয়ম এবং দুর্নীতির অভিযোগ ভূরি ভূরি। কেন্দ্রীয় সরকার কোথায়, কত টাকা খরচ করছে, তার হিসেব রাখে যে সংস্থা, সেই কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অফ ইন্ডিয়ার (CAG Report) রিপোর্টই বিশদ তথ্য উঠে এসেছে। সরকারচালিত প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনকারী সংস্থা হিন্দুস্তান এ্যারোনটিক্স লিমিটেড (HAL)-কেও কাঠগড়ায় তুলল CAG. HAL ১৬০ কোটি টাকা অপচয় করেছে বলে অভিযোগ। (HAL Expenditure)
গত সপ্তাহে সংসদের বাদল অধিবেশনে ১৮তম পাবলিক সেক্টর আন্ডারটেকিংস (PSU) রিপোর্ট পেশ হয়। তাতে বলা হয়, যুদ্ধবিমান, সাঁজোয়ায় ব্যবহৃত ইঞ্জিনের একরকম নকশা প্রথম অনুমোদিত হয়। কিন্তু তার জন্য যে উপাদান কাঁচামাল ব্যবহার করা হবে বলে ভাবা হয়েছিল, তা সময় মতো হাতে আসেনি। তাতে বার বার ইঞ্জিনের নকশা পরিবর্তন থেকে, সস্তার জিনিস কিনে টাকা নষ্ট করা হয় বলে দাবি করা হয়েছে।
কোন প্রকল্পে এই পরিমাণ টাকা নষ্ট হয়েছে, নির্দিষ্ট ভাবে তার উল্লেখ করেনি যদিও CAG. তবে ওই প্রকল্পকে Core Engine 1 বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, যে উপাদান ব্যবহার করে প্রথমে ইঞ্জিন তৈরি করার কথা ভাবা হয়েছিল, সময়ের মধ্যে তা হাতে আসেনি। এর পর তুলনামূলক সস্তার, বিকল্প কাঁচামাল ব্যবহার করে একটি ইঞ্জিন তৈরি করা হয়।
CAG জানিয়েছে, এর পর আবার সংস্থার বোর্ডের কাছে আবেদন জমা পড়ে। Core Engine 2 উৎপাদনের জন্য নতুন করে টাকা বরাদ্দ করতে বলা হয়। প্রথম বার যে কাঁচামাল ব্যবহার করা হবে বলে ঠিক হয়েছিল, সেটিই কেনার কথা বলা হয় আবার। বার বার এই সিদ্ধান্ত বদলে ১৫৯.২৩ কোটি টাকা অপচয় হয়। এই হিসেব ২০২২ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত সময়সীমার।
সংসদে জমা পড়া রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরতা বাড়িয়ে তুলতে, গ্যাস টার্বাইন ইঞ্জিনের নকশা তৈরি এবং ইঞ্জিন উৎপাদনের জন্য ৪৪১.৪১ কোটি টাকার বরাদ্দে অনুমোদন দেয় HAL.
এর ফলে, সেনাবাহিনীর বিমান, যুদ্ধবিমান, ড্রোন-সহ ছোট বিমানের ইঞ্জিনের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে বলে ভেবেছিল HAL. মোট দুই পর্যায়ে ইঞ্জিনের নকশা এবং উৎপাদন হবে বলে ঠিক হয়। প্রথম পর্যায়ে নকশা তৈরি, তাতে সংশোধন ঘটানো হবে বলে সিদ্ধান্ত নেন সকলে। দ্বিতীয় পর্যায়টিকে রাখা হয় ইঞ্জিন উৎপাদন ও পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য। সবমিলিয়ে ১৮৫.৮৭ কোটি বরাদ্দ করা হয় ২০২১ সালের মার্চ মাসে।
CAG জানিয়েছে, কাজ শুরু হতে দেরি হয় যদিও। তবে গ্যাস টার্বাইন ইঞ্জিন তৈরির প্রথম পর্যায়ের কাজ ২০১৫ সালের ডিসেম্বরেই সম্পন্ন হয়ে গিয়েছিল। খরচ পড়েছিল ৫২.৮৭ কোটি টাকা। কিন্তু পরে দেখা যায় ২০২২ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত প্রথমন পর্যায়ের কাজ জারি ছিল, যা নির্ধারিত সময়ের চেয়ে চার বছর বেশি। ২০১৯-’২০, ২০২১-’২২ সালে এর পর যে হিসেব দেয় HAL, তাতে ১৫৯.২৩ কোটি টাকার লোকসান দেখানো হয়।
HAL-এর তরফে দাবি করা হয়েছে, ইঞ্জিনের নকশা তৈরি এবং উৎপাদনের কাজ সঠিক ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়নি বলেই অত টাকা নষ্ট হয়েছে। Core Engine 1 এবং Core Engine 2 তৈরির মাঝামাঝি সময়ে প্রযুক্তিগত ত্রুটিগুলিও নিরীক্ষণ করে দেখা হয়নি বলে অভিযোগ।