নয়াদিল্লি: কানাডায় উচ্চশিক্ষার কথা ভাবছেন? জানেন, বিদেশি পড়ুয়াদের আবেদন গ্রহণের ক্ষেত্রে রাশ টানার সিদ্ধান্ত নিল সে দেশের সরকার? সোমবার কানাডার অভিবাসন, শরণার্থী ও নাগরিকত্ব বিষয়ক মন্ত্রী, মার্ক মিলার স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, 'এই নিয়ন্ত্রণ লাগু হওয়ায় ২০২৪ সালের জন্য ৩ লক্ষ ৬০ হাজার বিদেশি পড়ুয়ার আবেদন অনুমোদিত হওয়ার কথা, যা কিনা ২০২৩ সালের নিরিখে ৩৫ শতাংশ কম।' আপাতত দু'বছরের জন্য এই নিয়ন্ত্রণ আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাস্টিন ট্রুডোর প্রশাসন। ২০২৫ সালেও এই নিয়ন্ত্রণ থাকবে কিনা, তা চলতি বছরের শেষে পর্যালোচনা করা হবে। 


বিশদে...
মন্ট্রিয়লে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে মার্ক বলেন, 'কিছু বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সুযোগের অসদ্ব্যবহার করেছে। ক্যাম্পাসে উপযুক্ত পরিকাঠামো না থাকা , পড়ুয়াদের ঠিকঠাক সাহায্য না করা এবং মাত্রাতিরিক্ত টিউশন ফি নেওয়ার ফাঁকেই অগুনতি বিদেশি পড়ুয়া নিয়েছে তারা। ' স্রেফ রোজগার বাড়ানোর জন্য অতিরিক্ত বিদেশি পড়ুয়া নেওয়ার হিড়িক বেড়েছে। সফল হওয়ার জন্য ঠিকঠাক সাহায্যের ব্যবস্থা না করেই এই বিদেশি পড়ুয়াদের আনা হচ্ছে, মনে করে কানাডা প্রশাসন। এর ফলে হাউজিং, স্বাস্থ্য় পরিষেবা এবং অন্যান্য পরিষেবাতেও চাপ বেড়েছে।
ঘটনা হল, সাময়িক মেয়াদের অভিবাসন আটকাতে ট্রুডো সরকারের উপর চাপ বাড়ছিলই। এই মুহূর্তে কিউবেক শহরে, বৈঠকে বসেছেন জাস্টিন ট্রুডোর মন্ত্রিসভা। ঠিক তার মাঝেই এমন ঘোষণায় স্বাভাবিক ভাবেই হইচই পড়ে গিয়েছে। এবং একাংশের ধারণা, এর ফলে ভারতীয় পড়ুয়াদের উপর কপালে চিন্তার ভাঁজ বাড়তে পারে।


কেন চিন্তা বাড়তে পারে ভারতীয়দের?
পরিসংখ্য়ান বলছে, ২০২৩ সালে যে ৫ লক্ষ ৭৯ হাজার ৭৫টি বিদেশি পড়ুয়ার আবেদন গ্রাহ্য হয়েছিল, তার মধ্যে ভারতীয়ের সংখ্যা ছিল ২ লক্ষ ১৫ হাজার ১৯০।  ২০২২ সালে ওই সংখ্যা ছিল ২ লক্ষ ২৫ হাজার ৮৩৫। জমা পড়া বিদেশি পড়ুয়ার আবেদনের সংখ্যা ছিল, ৫ লক্ষ ৪৮ হাজার ৭৮৫। বস্তুত, গত পাঁচ বছর ধরেই এই সংখ্যাটা বাড়ছে। এহেন পরিস্থিতিতে হঠাৎ এমন নিয়ন্ত্রণ ঘোষণা করলে মুশকিলে পড়তে পারেন ভারতীয়দের অনেকেই, আশঙ্কা শিক্ষামহলের। প্রসঙ্গত, গত বছর থেকে ভারত-কানাডা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে এমনিতেই কিছুটা উত্তেজনা রয়েছে। গত জুনে ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় আততায়ীদের গুলিতে মারা যান খলিস্তানপন্থী হরদীপ সিংহ নিজ্জর। তাঁর মৃত্যুর জন্য দেশের পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে সরাসরি ভারতকে কাঠগড়ায় তোলেন ট্রুডো। ভারতীয় গুপ্তচররাই তাঁকে হত্যা করেছে, ভারত সরকার কানাডার মাটিতে হিংসাত্মক কাজকর্মে মদত দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। ভারত অভিযোগ মানেনি। পাল্টা জবাব দেওয়া হয়। 


আরও পড়ুন:সৌদি আরবের 'ছায়া' ? সমস্যা এক হওয়া সত্ত্বেও কেন পরস্পরের উপর হামলা চালাচ্ছে ইরান ও পাকিস্তান ?