নয়াদিল্লি: এই মুহূর্তে ভোটার তালিকায় নিবিড় সংশোধন, অর্থাৎ SIR কাজ চলছে গোটা দেশে। আর তা মিটে গেলেই দেশে জনগণনার কাজ শুরু হবে। শীতকালীন অধিবেশনে সংসদে এমনই ঘোষণা করল কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার। মোট দু'দফায় জনগণনা হবে ভারতে। জনগণনার দিন ক্ষণও জানিয়ে দিল কেন্দ্রের মোদি সরকার। (Census 2027)

Continues below advertisement

আর কবে জনগণনা হবে দেশে, লোকসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী সেই প্রশ্ন করেছিলেন সরকারকে। জবাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই জানান, SIR মিটলেই জনগণনার কাজ শুরু হবে। দু'দফায় জনগণনা হবে। ২০২৬ সালের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত প্রথম দফায় জনগণনা হবে। দ্বিতীয় দফায় জনগণনার কাজ হবে ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। (Census of India)

নিত্যানন্দ জানিয়েছেন, প্রথম দফায় বাড়ির তালিকা তৈরি করা হবে, বাড়ির গণনা হবে। দ্বিতীয় দফায় নাগরিকদের সংখ্যা নির্ধারণে জনগণনা হবে। প্রথম দফায়, ২০২৬ সালের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৩০ দিন ধরে কাজ চলবে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে। ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হবে জনগণনা। তবে লাদাখ, জম্মু ও কাশ্মীর, হিমাচলপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে ওই সময় তুষারপাত ঘটে। তাই ওই রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে জনগণনা হবে ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। 

Continues below advertisement

নিত্যান্দ জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রক, বিভাগ, সংগঠন ও পূর্ববর্তী জনগণনার তথ্যসমূহের নিরিখে আদমশুমারির প্রশ্নমালা তৈরি করা হবে। দেশে জনগণনার ইতিহাস যেহেতু ১৫০ বছরের বেশি, তাই আগের জনগণনাকে সামনে রেখেই পরবর্তী জনগণনা হবে।

জনগণনার পাশাপাশি, জাতিগণনার দাবিও উঠে আসছে লাগাতার। বিশেষ করে বিরোধীদের তরফে বার হার করে জাতিগণনার দাবি তোলা হয়েছে। আগেই জাতিগণনার দাবিতে সায় দেয় কেন্দ্র। এদিনও কেন্দ্র জানায়, জাতিগণনাও হবে। চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল সেই মর্মে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার রাজনীতি বিষয়ক কমিটি। ২০২৭ সালের জনগণনা ডিজিটাল মাধ্যম নির্ভর হবে বলেও জানিয়েছে কেন্দ্র। মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে নাগরিকরা নিজ নিজ পরিসংখ্যান তুলে ধরবেন। সেই মতো তথ্য সংগ্রহ করা হবে।

চলতি বছরের জুন মাসে জাতিগণনা হবে বলে জানায় কেন্দ্র।  ১০০ বছর পর এই প্রথম জাতিগণনা হতে চলেছে দেশে। কিন্তু জাতি জনগণনা হলেও, শ্রেণিগণনা হবে না বলে জানা যায়। অর্থাৎ কত সংখ্যক মানুষ তফসিলি জাতি, উপজাতি ও অনগ্রসর শ্রেণির মধ্যে পড়ছেন, তা জানা যাবে না। অন্য দিকে, জনগণনার কাজ শুরু হওয়ার কথা বলা হলেও, কবে হিসেব প্রকাশ করা হবে, তা জানানো হয়নি। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, জনগণনার গোটা প্রক্রিয়া শেষ করতে অনেকটা সময় নিতে পারে কেন্দ্র। ২০২৯ সালে জনগণনা রয়েছে, তার আগে চূড়ান্ত হিসেব সামনে আনা হবে কিনা, সন্দেহ রয়েছে। কারণ ২০১১ সালের হিসেব প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে। আবার OBC, SC, ST-র সংখ্যা প্রকাশ না করার অর্থ, শুধুমাত্র অর্থনৈতিক এবং সামাজিক মাপকাঠির নিরিখে কে, কোথায়, তাও বোঝা সম্ভব হবে না বলে মত রাজনৈতিক মহলের। ফলে মানুষের জীবনযাপন, অর্থনৈতিক অবস্থা, আড়ালেই থেকে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।