নয়াদিল্লি: ১৯৬৬ সালে সরকারি কর্মীদের রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (RSS) সঙ্গে যুক্ত থাকার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। ৫৮ বছর আগে জারি হওয়া সেই নিষেধাজ্ঞা সম্প্রতি তুলে নিয়েছে (RSS-linked ban lifted) নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার। এই বিষয়টি প্রকাশ্য়ে আসার পরেই কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিরোধীরা (oppositions)।
কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ জুলাই মাসের ৯ তারিখ ডিপার্টমেন্ট অফ পার্সোনেল অ্যান্ড ট্রেনিং-এর ইস্যু করা নির্দেশের কপি নিজের এক্স হ্যান্ডেল থেকে শেয়ার করেছেন। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, সরকারি কর্মীদের আরএসএসের কর্মসূচীতে যোগ দেওয়ার ওপর ১৯৬৬ সালে যে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল তা তুলে নেওয়া হয়েছে। ১৯৪৮ সালে নাথুরাম গডসে গান্ধীজিকে হত্যা করার পরে আরএসএসকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।
জয়রাম রমেশ তাঁর পোস্টে সেই বিষয়টি উল্লেখ করে লিখেছেন, গান্ধীজিকে হত্যা করার পরে ১৯৪৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সর্দার প্যাটেল আরএসএসের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন। পরে ভালো ব্যবহারের প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। তারপরও আরএসএস কোনওদিন নাগপুরে তিরঙ্গা পতাকা উত্তোলন করেনি। ১৯৬৬ সালে নতুন করে ফের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় আরএসএসের ওপর। সেইসময় পরিষ্কার করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল কোনও সরকারি কর্মচারী রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ ও জামাত-ই-ইসলামির কর্মসূচীর সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবে না। তারপর থেকে সেই নিষেধাজ্ঞাই জারি ছিল। অটলবিহারী বাজপেয়ীর শাসনকালেও সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার চেষ্টা হয়নি। কিন্তু, ২০২৪ সালের ৪ জুনের পর স্ব-অভিষিক্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আরএসএসের মত পার্থক্য দেখা দেওয়ার পরে ২০২৪ সালের ৯ জুলাই সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হল। এর ফলে এবার আমলাতন্ত্রেও আরএসএস মাতব্বরি চালাবে।
এই বিষয়ে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে তোপ দেগেছেন হায়দরাবাদের সাংসদ ও মিম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসিও। তাঁর কথায়, যদি এই নিষেধাজ্ঞা তোলার বিষয়টি সত্যি হয় তাহলে তা ভারতের অখণ্ডতা ও ঐক্যের বিরোধী। কারণ আরএসএস সদস্যরা দেশের আগে রাখে হিন্দুত্বকে। তাই এবার সরকারি কর্মীরাও যদি আরএসএস করার ছাড়পত্র পায় তাহলে তারা দেশের প্রতি আনুগত্য দেখাতে বাধ্য থাকবে না।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।