বেজিং: অশনি সঙ্কেত মিলেছিল আগেই। চিনে এ বার পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়ার দিকেই এগোচ্ছে (China Covid Cases)। উপসর্গহীন রোগী ছাড়াই দৈনিক ২ হাজারের বেশি মানুষ রোজ আক্রান্ত হচ্ছেন নোভেল করোনাভাইরাসে (China Covid Outbreak)। এই মুহূর্তে সেখানে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে করোনার BF.7 রূপ। অর্থাৎ আক্রান্ত রোগীদের অধিকাংশই BF.7-এ আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে (BF.7 Omicron variant)।
২০১৯-এর শেষ দিকে চিনেই প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। তার পর থেকে একাধিক বার চরিত্র বদলেছে অতি সংক্রামক এই ভাইরাস। এর মধ্যে বাকি সব রূপকে পিছনে ফেলে, গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ওমিক্রন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। BF.7 রূপও সেই চরিত্রবদলেরই ফসল, ওমিক্রনের বংশ বা জাতভাই।
ওমিক্রনে বংশ করোনার BA.5.2.1.7 বা BF.7 রূপ
ওমিক্রনেরই বংশধর BA.5.2.1.7 রূপ, সংক্ষেপে যাকে BF.7 বলা হয়। যে হারে চিনে সংক্রমণ উত্তরোত্তর বেড়ে চলেছে, তাতে বলা যায় যে, BF.7 করোনার অতি সংক্রামক রূপগুলির মধ্যে অন্যতম। অতি দ্রুত এর উন্মেষ ঘটে। দ্রুত এবং অতি সহজে সংক্রমণ ছড়ায়। শুধু তাই নয়, প্রতিরোধী টিকা নেওয়া থাকলেও এর সংক্রমণ থেকে রক্ষা মেলে না।
করোনার BF.7 রূপের উপসর্গ
BF.7-এ এখনও পর্যন্ত যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে বিশেষ কিছু উপসর্গ দেখা গিয়েছে, যেমন, জ্বর, কাশি, গলাব্যথা, নাক দিয়ে জল পড়া। অতিমারি বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, অতি সংক্রামক করোনার এই রূপের প্রকোপে কমপক্ষে ১০ লক্ষ মানুষের মৃত্য়ু হতে পারে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে।
আরও পড়ুন: WB Covid Update : নতুন করে কোভিড সতর্কবার্তা দেশে, কী পরিস্থিতি রাজ্যে ?
করোনার BF.7 রূপ অতি সংক্রামক
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ওমিক্রনের বংশ BF.7-এর প্রজনন ক্ষমতা ১০ থেকে ১৮.৬-এর মধ্যে। অর্থাৎ একবার কোনও ব্যক্তি যদি সংক্রমিত হন, তাঁর থেকে গড়ে ১০ থেকে ১৮.৬ জন সংক্রমিত হতে পারেন। সংক্রমিতদের মধ্যে অধিকাংশের কোনও উপসর্গই না থাকতে পারে। ফলে তাঁদের চিহ্নিত করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াতে পারে সরকার এবং প্রশাসনের পক্ষে।
কয়েক লক্ষ মানুষের প্রাণহানি হতে পারে বলে আশঙ্কা
একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, চিনের মোট জনসংখ্যার ৮৫ শতাংশ যদি চতুর্থ বুস্টার টিকা নেন, তবেই সংক্রমণের গতিরোধ করা সম্ভব। তাতে ৩ থেকে ৫৯ বছর বয়সি ৯৫ শতাংশ জনসংখ্যা লাভবান হবেন। তাই ৩ থেকে ৫৯ এবং ১৮ থেকে ৫৯ বছর বয়সিদের মধ্যে বুস্টার টিকার হার যদি ৯৫ শতাংশ থাকে, তবেই প্রতি ১০ লক্ষে সামগ্রিক মৃত্যুহার ২৪৯ এবং ৩০৫-এ বেঁধে রাখা যাবে বলে দাবি করা হয়েছে সমীক্ষায়।
চিনের করোনা পরিস্থিতি অনুধাবন করে অতিমারি বিশেষজ্ঞ এরিক ফিগল-ডিং জানিয়েছেন, আগামী তিন মাসে চিনের জনসংখ্যার ৬০ শতাংশকে কাবু করে ফেলবে করোনা। আগামী তিন মাসের মধ্যে BF.7-এর প্রকোপে গোটা বিশ্বের ১০ শতাংশ জনসংখ্যা সংক্রমিত হবেন বলেও দাবি তাঁর।