বেজিং: উত্তরোত্তর সংক্রমণ বৃদ্ধিতে অশনি সঙ্কেত দেখেছিলেন অনেকেই (China COVID Situation)। পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে বলে এ বার ইঙ্গিত দিলেন অতিমারি বিশেষজ্ঞরাও (COVID Pandemic)। তাঁদের দাবি, এই শীতেই চিনে করোনার তিনটি ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে। কোভিড-শূন্য হতে এ যাবৎ দেশে দফায় দফায় কড়া বিধিনিষেধ জারি করেছে চিন সরকার (China News)। তাতে সাধারণ মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়েছে তারা। রুটি-রোজগার বন্ধ হওয়ার আশঙ্কায় জায়গায় জায়গায় বিক্ষোভে নামেন সাধারণ মানুষ। তাতেই বিধিনিষেধে ঢিলেমি দেয় চিন সরকার। তাদের এই সিদ্ধান্তই নতুন করে বিপদ ডেকে এনেছে বলে মনে করছেন অতিমারি বিশেষজ্ঞরা। 


এই শীতেই চিনে করোনার তিনটি ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে


সংক্রমণবৃদ্ধি, মৃত্যুবৃদ্ধি নিয়ে এই মুহূর্তে নীরবতাই পালন করছে চিন সরকার। যদিও গোড়া থেকেই পরিস্থিতি বেগতিক হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিতে শোনা গিয়েছিল তাদের। চলতি মাসের শুরুতে কড়া বিধি-নিষেধ তুলে নিলেও, সচেতন না হলে আগামী কয়েক মাসে পরিস্থিতি ভয়াঙ্কর হতে পারে বলে সতর্কবার্তা দেয় তারা। তার পরেও সংক্রমণবৃদ্ধি ঠেকানো যায়নি, বরং বেড়েছে।


চাইনিজ সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের মুখ্য অতিমারি বিশেষজ্ঞ উ জুনিউ বলেন, "এই মুহূর্তে যে হারে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, শীতের তিন মাসে তাতে তিনটি ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে।" জুনিউয়ের দাবি, জানুয়ারির মাঝামাঝি প্রথম ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে। ২১ জানুয়ারি থেকে দেশে নববর্ষ উপলক্ষে (Lunar news Year) জন সমাগম বাড়বে। তাতে আছড়ে পড়বে দ্বিতীয় ঢেউ। ফেব্রুয়ারির শেষ থেকে মার্চের মাঝামাঝি সাধারণ মানুষ কর্মক্ষেত্রে ফিরতে শুরু করলে,  চিনে তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন জুনিউ। 


আরও পড়ুন: Taj Mahal: ৩৭০ বছরে এই প্রথম, নোটিস পেল তাজমহল, ২ কোটির কর মেটানোর নির্দেশ


এমন পরিস্থিতি চিনের স্বাস্থ্য পরিষেবাও মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ দেশের হাসপাতালগুলি এই মুহূর্তে দ্বৈত সমস্যার মুখোমুখি। এর মধ্যে প্রথমটি হল, উত্তরোত্তর সংক্রমণবৃদ্ধিতে হাসপাতালে শয্যা কম পড়ছে। দ্বিতীয়টি হল, রোগী সামলাতে গিয়ে স্বাস্থ্য আধিকারিক থেকে কর্মীরাও সংক্রমিত হয়ে পড়ছেন বেশি সংখ্যায়। একই সঙ্গে দেশে ওষুধের জোগানেও ঘাটতি পড়তে পারে বলে ইঙ্গিত মিলতে শুরু করেছে। 


এই মুহূর্তে চিনে দৈনিক সংক্রমণ ২ হাজারের আশেপাশে রয়েছে


সরকারি হিসেবে এই মুহূর্তে দেশে দৈনিক সংক্রমণ ২ হাজারের আশেপাশে রয়েছে। কিন্তু রোগীদের অধিকাংশ যেহেতু উপসর্গহীন, তাই সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করাতেও গরমিল থেকে যাচ্ছে বলে গত সপ্তাহেই জানায় চিনের স্বাস্থ্য কমিশন। তাই উপসর্গহীনরা মূলত হিসেবের বাইরেই থেকে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা তাদের। এমন চললে আগামী কয়েক মাসে মৃতের সংখ্যা ১ লক্ষ ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা কারণ টিকার জোগান যেমন অপর্যাপ্ত থেকে যাচ্ছে, তেমনই মানুষের মধ্যে অ্যান্টিভাইরাল নেওয়ার ক্ষেত্রেও অনীহা দেখা যাচ্ছে বলে দাবি তাঁদের। ইউনিভার্সিটি অফ হংকংয়ের অধ্যাপকদের অনুমান, ১৪০ কোটি জনসংখ্যার দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৯ লক্ষ ৬০ হজার পেরিয়ে যেতে পারে।