বেজিং: ডোনাল্ড ট্রাম্প জমানায় চরম তিক্ততায় পৌঁছেছে চিন-মার্কিন সম্পর্ক। তা তলানিতে ঠেকেছে বলা যায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে ট্রাম্প একাধিক ইস্যুতে চিনকে নিশানা করেছেন। চিনের ইউহান প্রদেশকে নোভেল করোনাভাইরাসের ‘আঁতুরঘর’ আখ্যা দিয়ে দুনিয়াব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মারণ ভাইরাসকে ‘ইউহান ভাইরাস’ তকমা দিয়েছেন। চিনকেই এই ভাইরাস ছড়ানোর জন্য দায়ী করেছেন ট্রাম্প। পাশাপাশি দুদেশের বিরোধ ঘনিয়েছে বাণিজ্য সংক্রান্ত শুল্ক হার নিয়েও। এই প্রেক্ষাপটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের হারে উল্লসিত না হোক, তাঁর বিরোধিতা করে জয়ী জে বাইডেনকে স্বাগত জানানোর কথা চিনের। কিন্তু প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের দেশ ট্রাম্পের পরাজয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি, এমনকী নবনির্বাচিত বাইডেনকে অভিনন্দন, শুভেচ্ছাও জানাতে তৈরি নয় তারা। চিনের বক্তব্য, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ভোটের ফল এখনও স্থির হয়নি, তা সংশ্লিষ্ট আইন, পদ্ধতি-প্রক্রিয়া’ অনুসারে নির্ধারিত হওয়া বাকি।
চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিনকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা বলেছে, আমাদের অভিমত হল, মার্কিন আইন ও পদ্ধতি-প্রক্রিয়ার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই এই নির্বাচনের ফল নির্ধারিত হবে। সংশ্লিষ্ট ইস্যুতে চিনের অবস্থান স্পষ্ট, ধারাবাহিক। দেশের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা, উন্নয়নের সুফল সুরক্ষিত রাখতে আমাদের অঙ্গীকার শিথিল হবে না। আমরা সর্বদা বলেছি, চিন ও আমেরিকার অবশ্যই পারস্পরিক সম্মান ও উভয়ের ঘরোয়া বিষয়ে নাক না গলানোর নীতির ভিত্তিতে চলতি বিরোধগুলি নিয়ন্ত্রণ করা, চিন-মার্কিন সম্পর্কের স্বাস্থ্যকর, স্থিতিশীল অগ্রগতির লক্ষ্যে এগনো উচিত। আমরা আশা করি, নয়া মার্কিন সরকারও অর্ধেক রাস্তা পেরিয়ে চিনের সঙ্গে মিলবে।
এই নিয়ে রাশিয়া, মেক্সিকোর পর চিনও এখনও পর্যন্ত বাইডেনকে স্বীকৃতি দিতে অনীহা দেখিয়ে চলেছে। এদিকে মস্কোর খবর, মার্কিন ভোটে বিজয়ীকে অভিনন্দন জানানোর আগে সরকারি ফলাফলের অপেক্ষা করছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের বলেছেন, আমরা মনে করি, সরকারি ভাবে নিশ্চিত ফলাফল প্রকাশের জন্য অপেক্ষা করাই ঠিক। আপনাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, প্রেসিডেন্ট পুতিন বারবার বলেছেন, তিনি মার্কিন জনগণের রায়, পছন্দকেই সম্মান করবেন।
এর মধ্যেই ট্রাম্প বলে চলেছেন, তিনি পরাজয় মানবেন না। ভোটে রিগিং করা হয়েছে, তিনিই প্রকৃত জয়ী বলে দাবি তাঁর।