China Dam in Tibet: ব্রহ্মপুত্রের উপর পৃথিবীর বৃহত্তম বাঁধ তৈরি করছে চিন, উদ্বেগ বাড়ল ভারতের

China Dam on Brahmaputra River: যেখানে বাঁধটি তৈরি করা হবে, তা ভারতীয় সীমান্তের খুব কাছে। সেই নিয়ে উদ্বেগ বাড়ল ভারতের। 

Continues below advertisement

নয়াদিল্লি: তিব্বতে পৃথিবীর বৃহত্তম বাঁধ তৈরির ঘোষণা করেছে চিন। ব্রহ্মপুত্র নদের উপর ওই বাঁধ তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছে তারা। সেখানে আগের চেয়ে তিন গুণ বেশি জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে, স্পর্শকাতর ভূমিতে নয়া বাঁধটি তৈরি হবে। যেখানে বাঁধটি তৈরি করা হবে, তা ভারতীয় সীমান্তের খুব কাছে। সেই নিয়ে উদ্বেগ বাড়ল ভারতের। (China Dam in Tibet)

Continues below advertisement

বর্তমানে পৃথিবীর বৃহত্তম বাঁধের শিরোপা 'থ্রি গর্জেস বাঁধে'র মাথায়। মধ্য চিনের হুবেই প্রদেশে অবস্থিত বাঁধটি। আমেরিকার গবেষণা সংস্থা NASA আগেই ওই বাঁধটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। 'থ্রি গর্জেস বাঁধে'র জেরে পৃথিবীর ঘূর্ণন ০.০৬ শতাংশ কমে গিয়েছে বলে জানায় NASA. এবার তার চেয়েও বড় বাঁধ নির্মাণের ঘোষণা করল চিন। সেখানে 'থ্রি গর্জেস বাঁধে'র চেয়ে তিন গুণ বেশি জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। (China Dam on Brahmaputra River)

ব্রহ্মপুত্র নদ তিব্বতে ইয়ারলুং সাংপো নামে পরিচিত। তার উপরই নয়া বাঁধ নির্মাণের ঘোষণা করেছে চিন। কিন্তু স্পর্শকাতর হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে চিনের নয়া বাঁধ নির্মাণ নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। কারণ ওই অঞ্চল শুধুমাত্র ভৌগলিক ভাবেই দুর্বল নয়, ভূমিকম্প প্রবণ এলাকাও। সেখানে ভমিকম্পের তীব্রতাও অনেক বেশি হয়। দানবাকৃতির ওই বাঁধ নিয়ে উদ্বিগ্ন দিল্লি।

গত সপ্তাহে চিনের ওই ঘোষণার পরই বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছে দিল্লি। বলা হয়েছে, ভারত ওই অঞ্চলে নিজের স্বার্থ রক্ষা করবে। পাশাপাশি চিনকে বার্তা দেওয়া হয়েছে যে, বেজিং যতই বাঁধ নির্মাণ করুক না কেন, নদের জলে ভারতেরও অধিকার রয়েছে। বাঁধ তৈরিতে স্বচ্ছতা থাকা দরকার বলেও জানিয়েছে ভারত। শুক্রবার বিদেশ মন্ত্রক জানায়, পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছে তারা। প্রয়োজনে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, ওই এলাকায় বাঁধ নির্মাণ হলে ব্রহ্মপুত্রের জলের ধারাও প্রভাবিত হবে। পাশাপাশি ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার উপরও প্রভাব পড়বে। বাঁধ নির্মাণের সময় ওই অঞ্চলে খরা দেখা দিতে পারে এবং পরবর্তীতে বিধ্বংসী বন্যাও আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে লক্ষ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। বিশেষ করে নদ অববাহিকার নিম্নভাগে বসবাসকারী ভারতীয়দের জীবনে বিপদ নেমে আসতে পারে।

চিন ওই বাঁধ নির্মাণ করলে অরুণাচল প্রদেশ এবং অসমের মতো রাজ্যেও তার প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা শুরু হয়েছে। উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে চিনকে।  এ নিয়ে ভারতের সঙ্গে চিনের আলোচনায় বসা উচিত বলেও মত দিল্লির। ভূরাজনৈতিক ক্ষেত্রেও এই বাঁধের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। এমনিতেই সীমান্ত নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সংঘাত রয়েছে, নতুন করে জল নিয়ে টানাপোড়েন না শুরু হয়, সেই আশঙ্কাও করছেন অনেকে।
এখনও পর্যন্ত যে তথ্য হাতে এসেছে, সেই অনুযায়ী, নির্মাণকার্য সম্পূর্ণ হলে বাঁধটি পৃথিবীর বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে পরিণত হবে। তিব্বত মালভূমির পূর্ব প্রান্তে বাঁধটি নির্মাণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যা ব্রহ্মপুত্রের নিম্ অংশ। 

এটি তিব্বতীয় মালভূমির পূর্ব প্রান্তে নির্মিত হওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। ১৪তম পঞ্চবার্ষিকী প্রকল্পের আওতায় দানবাকৃতি বাঁধটি নির্মাণ করতে চলেছে চিন। সেখান থেকে বার্ষিক ৩০০০ কোটি কিলোওয়াট-আওয়ার বিদ্যুৎ তৈরি হবে বলে জানা গিয়েছে। প্রকল্প তৈরিতে খরচ হবে ১৩ হাজার ৭০০ কোটি ডলার, ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ১২ লক্ষ কোটি টাকা। এর আগে, 'থ্রি গর্জেস বাঁধ' নির্মাণের সময় ১৪ লক্ষ মানুষকে ঘরছাড়া হতে হয়। তার চেয়ে তিন গুণ বড় হতে চলেছে নয়া বাঁধটি। কত সংখ্যক মানুষকে অন্যত্র সরানো হতে পারে, তা এখনও পরিষ্কার ভাবে জানায়নি চিন।

Continues below advertisement
Sponsored Links by Taboola