নয়াদিল্লি: ভরা এজলাসে তাঁকে লক্ষ্য করে জুতো ছুড়েছিলেন আইনজীবী। সেই নিয়ে নিন্দায় সরব গোটা দেশ। একে একে মুখ খুলেছেন পরিবারের লোকজন। এবার নীরবতা ভাঙলেন দেশের প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই। তবে তিনি ওই ঘটনা মনে রাখতে চান না, ‘ভুলে গিয়েছেন’ বলে জানালেন। (CJI BR Gavai)
ওপেন কোর্টে বিচারপতি উজ্জ্বল ভুঁইয়াকে পাশে নিয়ে গোটা ঘটনায় মুখ খোলেন CJI গাভাই। তিনি বলেন, “সোমবার যা ঘটে, তাতে আমার সহকর্মী এবং আমি প্রথমে স্তম্ভিত হয়ে যাই। তবে আমরা ওসব ভুলে গিয়েছি।” তিনি বিষয়টি নিয়ে আর কোনও মন্তব্যই করতে চাননি। (Rakesh Kishore)
তবে CJI গাভাই বিস্মৃত ঘটনা বলে গোটা বিষয়টি উড়িয়ে দিলেও, বিচারপতি ভুঁইয়া তীব্র নিন্দা করেন ওই ঘটনার। তিনি বলেন, “আমার নিজস্ব মতামত রয়েছে এব্যাপারে। উনি প্রধান বিচারপতি। এটা উড়িয়ে দেওয়ার মতো বিষয় নয়। বিচারপতি হিসেবে এমন অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হয় আমাদের, যা অন্যদের যুক্তিযুক্ত নাও মনে হতে পারে। তাই বলে আমাদের মত বদলে যাবে না।”
CJI ভুঁইয়ার উপর হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতাও। তিনি বলেন, “ক্ষমার অযোগ্য ঘটনা।” প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও ইতিমধ্যে ঘটনার নিন্দা করেছেন।
গত সোমবার CJI গাভাইকে লক্ষ্য করে জুতো ছোড়েন আইনজীবী রাকেশ কিশোর। ভগবান বিষ্ণুর মূর্তি নিয়ে একটি মামলায় CJI গাভাইয়ের মন্তব্য পছন্দ হয়নি বলেই এমন কাণ্ড ঘটান তিনি। সেই নিয়ে গোটা দেশ জুড়ে নিন্দার ঝড় উঠলেও, কোনও অনুশোচনা নেই ওই আইনজীবীর। তাঁর দাবি, সনাতন ধর্মের অপমান বরদাস্ত করা উচিত নয়। ‘পরমাত্মা’ তাঁকে দিয়ে একাজ করিয়েছেন বলেও দাবি করেন।
CJI গাভাই রাকেশ কিশোরের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি। পুলিশও তাঁকে ছেড়ে দেয় কয়েক ঘণ্টা পর। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশন তাঁকে বহিষ্কার করেছে। সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে তাঁর প্রবেশও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাঁর লাইসেন্স সাসপেন্ড করা হয় আগেই।
সুপ্রিম কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, সরাসরি বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতায় আঘাত হেনেছেন রাকেশ কিশোর। আদালতের পবিত্রতা নষ্ট করেছেন। তবে দিল্লিতে কিছু না হলেও, রাকেশ কিশোরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে কর্নাটকে। বেঙ্গালুরুতে অল ইন্ডিয়া অ্যাডভোকেটস অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগের ভিত্তিতে জিরো এফআইআর দায়ের হয়েছে সেখানে। বিচারব্যবস্থার মর্যাদা লঙ্ঘন, আইনের শাসনের মর্যাদাহানির অভিযোগ জমা পড়েছে।