উত্তরকাশী: মেঘভাঙা বৃষ্টিতে ফের বড় বিপর্যয় নেমে এল 'দেবভূমি' উত্তরাখণ্ডে। হড়পা বানে ভেসে যাওয়ার জোগাড় চারিদিক। ইতিমধ্যেই জলের নীচে চলে গিয়েছে বহু বাড়ি, নির্মাণ। পাহাড়ি এলাকায় বসতি অঞ্চলে আছড়ে পড়তে দেখা গিয়েছে বিধ্বংসী ঢেউ। সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ জন নিখোঁজ বলে জানা গিয়েছে। প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি এবং হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত চার জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। নিখোঁজ অন্তত ৫০। (Uttarakhand Cloudburst)

মঙ্গলবার মেঘভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্যয় নেমে এসেছে উত্তরাখণ্ডের ক্ষীরগঙ্গা নদী সংলগগ্ন এলাকায়। সোশ্য়াল মিডিয়ায় যে ভিডিও সামনে এসেছে, তাতে দেখা গিয়েছে, পাহাড়ের গা বেয়ে ছুটে চলা নদী একেবারে ফুলে ফেঁপে রাক্ষুসে আকার ধারণ করেছে। হড়পা বানে দ্রুত গতিতে ছুটে আসছে ঘোলাটে জলরাশি। সটান বসতি এলাকায় পর পর বাড়িকে গিলে নিচ্ছে। (Flash Floods In Uttarakhand)

দূর থেকে ওই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেন অনেকেই। চোখের সামনে ওই ঘটনা ঘটতে দেখে তাঁরাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। চিৎকার, আর্তি শোনা যায় চারিদিক থেকে। হড়পা বানে ক্ষীরগঙ্গা নদী সংলগ্ন, উত্তরকাশীর তরলি গ্রামের বহু বাড়ি ভেসে গিয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামি জানিয়েছেন, উদ্ধারকার্য শুরু হয়েছে। ত্রাণের ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে আগে থেকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, 'ধারালিতে মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে যে বিপর্যয় নেমে এসেছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং পীড়াদায়ক। রাজ্য ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, জেলা প্রশাসন এবং একাধিক টিম উদ্ধারকার্যে নেমেছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে উদ্ধারকার্য। আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে আমার, পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। সকলে যাতে নিরাপদ থাকেন, প্রার্থনা করছি ঈশ্বরের কাছে'।

স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, ক্ষীরগঙ্গা জলাধারের কাছে মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরেই বিপর্যয় নেমে এসেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ধারালি গ্রামের, গঙ্গোত্রী যাওয়ার পথে এই ধারালি গ্রামে থামতে হয়। নদীর জলস্তরও বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। গ্রামের বাড়িঘর, দোকান সব ভেসে গিয়েছে। জলের তোড়ে রাস্তা উঠে গিয়ে পড়ে রয়েছে কাদা। একাধিক হোটেল এবং হোমস্টে-র কোনও অস্তিত্ব আর নেই। 

ধারালিতে প্রায় ৫০ জনের কোনও খোঁজ নেই বলে জানা গিয়েছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, ধ্বংসস্তূপের নীচে অন্তত ১০-১২ জন শ্রমিক চাপা পড়ে রয়েছেন। পাশাপাশি, চার জনের মৃত্যুর খবরও উঠে এসেছে। বানালা পাত্তি এলাকায় জলের তোড়ে ১৮টি ছাগল ভেসে যায়। আবহবিদরা জানিয়েছেন, ১০ অগাস্ট পর্যন্ত উত্তরাখণ্ডে ভারী বৃষ্টি চলবে।