প্রকাশ সিনহা ও ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: কয়লা পাচার কাণ্ডে ঘুষের কালো টাকা কীভাবে বাজারে খাটানো হত, তার তদন্তে বাঁশদ্রোণীর ব্যবসায়ী রণধীর বার্নওয়ালকে সাত ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করল সিবিআই। কয়লা কাণ্ডের তদন্তে আজও কলকাতা সহ রাজ্যের দশটি জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে ইডি।


২৭ মার্চ রাজ্যে প্রথম দফার ভোট। রাজনীতির পারদ চড়ছে। শাসক-বিরোধী বাগযুদ্ধের মধ্যেই সমান্তরাল ভাবে এগিয়ে চলেছে গরু ও কয়লা কাণ্ডের তদন্ত। প্রভাবশালীদের নাগাল পেতে সিবিআইয়ের নজরে রয়েছে রাজ্যের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী।


কয়লাকাণ্ডের তদন্তে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, রাজ্যের একাধিক আইপিএসের কাছে ঘুষের টাকা পৌঁছে দিত পাচারকারীরা ৷ পুলিশকর্তাদের একাংশ ঘুষের ওই কালো টাকা বাজারে খাটাতেন ৷ বিভিন্ন ব্যবসায়ীর মাধ্যমে পুলিশের ভাগে যাওয়া কয়লা পাচারের কালো টাকা সাদা করা হত। এই কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগে শুক্রবার ব্যবসায়ী রণধীর বার্নওয়ালের বাঁশদ্রোণীর ফ্ল্যাটে হানা দেন সিবিআই অফিসাররা। তাঁর অফিসেও অভিযান চালানো হয়। শনিবার ব্যবসায়ী রণধীর বার্নওয়ালকে নিজাম প্যালেসের অফিসে ডেকে গোয়েন্দারা ৭ ঘণ্টা ডিজ্ঞাসাবাদ করেন।


সিবিআই সূত্রে খবর, বেলা ১১টা থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাঁকে ৷ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, শুক্রবার রণধীরের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে তাঁরা যে নথি পেয়েছেন, তা থেকে বেশ কিছু নতুন তথ্য মিলেছে। সিবিআই সূত্রে খবর, এদিন রণধীর বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর দিলেও, তাঁর সব জবাবে সন্তুষ্ট নন গোয়েন্দারা। ভবিষ্যতে তাঁকে আবার ডাকা হতে পারে। সিবিআইয়ের দাবি, তাঁরা রণধীরের আয়কর সংক্রান্ত নথি ও সম্পত্তির হিসেব খতিয়ে দেখছেন।


কয়লাকাণ্ডের তদন্তে শুক্রবার ১৪টি জায়গায় অভিযান চালিয়েছিল ইডি ও সিবিআই ৷ শনিবারও ইডির গোয়েন্দারা ১০টি জায়গায় হানা দেন ৷ ক্যামাক স্ট্রিটের ‘শান্তিনিকেতন’ বিল্ডিংয়ে এক চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের অফিসে তল্লাশি চালায় ইডি। ‘শান্তিনিকেতন’ নামের ওই বহুতলেই রাজ্যের একাধিক প্রভাবশালীর অফিস রয়েছে ৷ এর পাশাপাশি একবালপুরে ডায়মন্ডহারবার রোডেও এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি।


কয়লাকাণ্ডে ইতিমধ্যেই তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী ও শ্যালিকাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন অভিষেক। তিনি বলেন, “সিবিআইয়ের ভয়ে অনেকে দল ছেড়েছে। কিন্তু সেই ভয়ে আমার শিরদাঁড়া বিক্রি হবে না৷ ’’


কয়লাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালা এবং আরেক অভিযুক্ত যুব তৃণমূল নেতা বিনয় মিশ্র এখনও ফেরার।