নয়াদিল্লি: নির্বাচনী বন্ডকে (Electoral Bonds) অসংবিধানিক ঘোষণা করেছে নির্বাচনী বন্ডকে, তার পরও কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের তরফে নানা তত্ত্ব সামনে আনা হচ্ছে। এমনকি চলতি লোকসভা নির্বাচনে তৃতীয় বারের জন্য জয়ী হলে আবারও নির্বাচনী বন্ড ফেরানো হবে বলে ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন (Nirmala Sitharaman)। তাঁর এই ঘোষণার তীব্র সমালোচনা করেছে কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা। তাদের দাবি, “বিজেপি লুঠতরাজ চালিয়ে যেতে চায়?”
নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে কর্পোরেট সংস্থা এবং শিল্পপতিদের কাছ থেকে রাজনৈতিক দলগুলি মোট ১২,১৪৫.৮৭ কোটি টাকা চাঁদা পেয়েছে বলে জানা গিয়েছে, এর মধ্যে বিজেপি একাই ৬০৬০ কোটি টাকা পেয়েছে। সেই নিয়ে বিতর্কের মধ্যে মুখ খুলেছেন নির্মলার স্বামী, অর্থনীতিবিদ পরাকলা প্রভাকরও। শুধু ভারত নয়, নির্বাচনী বন্ড পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দুর্নীতি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
কিন্তু এত বিতর্কের মধ্যেও সীতারামন সম্প্রতি জানান, তৃতীয় বার ক্ষমতায় ফিরলে নির্বাচনী বন্ড ফিরিয়ে আনা হবে। তিনি জানান, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর বিষয়টি নিয়ে সব পক্ষের সঙ্গে শলা-পরামর্শ করা হবে। সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে, এমন পরিবর্তন ঘটিয়ে আবারও ফেরানো হতে পারে নির্বাচনী বন্ড। সুপ্রিম কোর্ট যেভাবে নির্বাচনী বন্ডকে অসাংবিধানিক এবং বেআইনি ঘোষণা করেছে, তাকে এখনও পর্যন্ত চ্যালেঞ্জ জানানোর কথা না ভাবলেও, অন্য ভাবে নির্বাচনী বন্ড ফেরানোর ইঙ্গিত দেন সীতারামন।
আরও পড়ুন: Rahul Gandhi : অসুস্থ রাহুল গান্ধী !
সীতারামনের এই মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কংগ্রেস। দলের নেতা জয়রাম রমেশের কথায়, ‘আমরা জানি, #PayPM দুর্নীতিতে জনগণের ৪ লক্ষ কোটি টাকা লুঠ করেছে BJP. এই লুঠ চালিয়ে যেতে চায় ওরা। সুপ্রিম কোর্ট যে নির্বাচনী বন্ডকে অসাংবিধানিক এবং বেআইনি ঘোষণা করেছে, বিজেপি ক্ষমতায় ফিরলে তা আবার চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্মলা সীতারামন’।
বর্ষীয়ান আইনজীবী তথা সাংসদ কপিল সিব্বলও এ নিয়ে মুখ খুলেছেন। তাঁর বক্তব্য, “নির্মলা সীতারামনকে শ্রদ্ধা করি আমি। কিন্তু একটি সাক্ষাৎকারে উনি বলেছেন, নির্বাচনী বন্ড ফিরিয়ে আনবেন। স্বচ্ছতা বজায় রাখতেই নির্বাচনী বন্ড আনা হয়েছিল বলেও দাবি করেছেন উনি। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ সম্পূর্ণ উল্টো। সুপ্রিম কোর্ট পরিষ্কার জানিয়েছে, নির্বাচনী বন্ড একেবারে স্বচ্ছ প্রক্রিয়া নয়, যথেষ্ট হেঁয়ালি রেখে সেটি চালু করা হয়েছিল। আসলে এবারের নির্বাচনের টাকা রয়েছে ওদের কাছে। কিন্তু হারলে তো টাকা লাগবে, তাই... মোহন ভাগবত চুপ কেন?” এ নিয়ে বিজেপি-র তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি এখনও পর্যন্ত।