নয়াদিল্লি: কমছে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা। গ্রামীণ এলাকায় কেনাকাটা বাবদ খরচ চার দশকে সর্বনিম্ন। ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্যাল অফিসের অপ্রকাশিত তথ্য তুলে ধরে শুক্রবার সকালে এমনটাই খবর প্রকাশিত হয়েছে সংবাদমাধ্যমের একাংশে। আর এরপরই সন্ধ্যেবেলা মোদি সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, তথ্যের গুণমানের জন্য ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষের সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা সংক্রান্ত সমীক্ষার রিপোর্ট এবার প্রকাশ করা হবে না।
প্রকাশিত রিপোর্টে ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিক্যাল অফিস বা এনএসও-র যে অপ্রকাশিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে, সেই অনুযায়ী, ২০১৭-র জুলাই থেকে ২০১৮-র জুনের মধ্যে গ্রামাঞ্চলে নিত্যপণ্য কেনাকাটার হার ৮.৮ শতাংশ কমেছে। ১৯৭২-৭৩ এর পর একটানা এক বছর এমন পরিস্থিতি আর কখনও দেখা দেয়নি।
চলতি বছরের জুন মাসেই এনএসও-র এই রিপোর্ট প্রকাশ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিক্যাল অফিস যে পরিসংখ্যান ও পরিকল্পনা রূপায়ণ মন্ত্রকের অধীনস্থ, তারা জানিয়েছে, তথ্যের গুণমানের কারণে ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষের ক্রয়ক্ষমতা সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২০২০-২১ এবং ২০২১-২২ অর্থবর্ষে পরবর্তী সমীক্ষা করা সম্ভব কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
যদিও, বিরোধীরা এই দাবি মানতে নারাজ। কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী ট্যুইট করে বলেন, মোদি সরকারের অর্থনীতির এমন ডুবন্ত দশা যে, সরকারকে নিজের রিপোর্ট লুকোতে হচ্ছে। কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ও পরিকল্পনা রূপায়ণ মন্ত্রক অবশ্য এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তাদের দাবি, আমাদের নজরে এসেছে যে, ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্যাল অফিসের একটি রিপোর্টকে তুলে ধরে বিভিন্ন জায়গায় দাবি করা হচ্ছে যে, সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমছে। পাশাপাশি এও বলা হচ্ছে যে, বিরূপ তথ্য উঠে আসার জন্যই রিপোর্ট প্রকাশ করা হচ্ছে না। আমরা জানাতে চাই, তথ্য সংগ্রহ, সমীক্ষা এবং রিপোর্ট পেশের কাজটি অত্যন্ত পরিশ্রমসাধ্য। মন্ত্রকের কাছে যে তথ্য এসেছে, তা এখনও খসড়ার পর্যায়ে রয়েছে। এটিকে চূড়ান্ত রিপোর্ট হিসেবে বিবেচনা করা যায় না।
বিজেপির দাবি, ভারতের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোটেই উদ্বেগজনক নয়। এবছর লোকসভা ভোটের আগে ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভে অফিসের ফাঁস হওয়া রিপোর্টে দাবি করা হয়, ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে ভারতে বেকারত্বের হার ৪৫ বছরে সর্বাধিক।
সেই রিপোর্টটি চূড়ান্ত করেনি কেন্দ্র। কিন্তু, দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর সেই রিপোর্টকে সত্য বলে মেনে নেয় মোদি সরকার। কয়েকমাসের মধ্যে এবার ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্যাল অফিসের অপ্রকাশিত তথ্য নিয়ে শুরু হল রাজনৈতিক তরজা।