নয়া দিল্লি : করোনা মোকাবিলায় টিকাই অন্যতম হাতিয়ার। বারবার বলছেন চিকিৎসকরা। এদিকে ভ্যাকসিন নেওয়া ঘিরে মহিলাদের মনে তৈরি হয়েছে বেশ কিছু প্রশ্ন। অনেকেরই আশঙ্কা, ঋতুকালে ভ্যাকসিন নিলে সমস্যা তৈরি হতে পারে শরীরে। মহিলাদের সেই চিন্তা দূর করলেন খোদ চিকিৎসকরা।


কী বলছেন তাঁরা ?


সমস্যার সূত্রপাত সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টকে ঘিরে। যেখানে বলা হয়েছে, মহিলারা ভ্যাকসিন নেওয়ার আগে পিরিয়ডের দিনক্ষণ মনে রাখবেন। কোনওভাবে ঋতুকালের ৫দিন আগে বা পরে ভ্যাকসিন নেবেন না। কারণ, সেই সময় আপনাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা খুবই কম থাকে।


এ প্রসঙ্গে সংবাদ সংস্থা আইএএনএস লাইফ-কে নয়ডার মাদারহুড হসপিটালের গাইনোকলজিস্ট মঞ্জু গুপ্তা বলেন, '' কোভিড ১৯-এর টিকা শরীরের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য দেওয়া হচ্ছে। সেক্ষেত্রে শরীরের ওপর এই টিকা কীভাবে উল্টো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে, তা বুঝতে পারছি না। এই দাবির কোনও বিজ্ঞানসম্মত ভিত্তি নেই। যা বুঝিয়ে দিতে পারে, টিকা নেওয়ার ফলে ঋতুচক্রে পরিবর্তন দেখা যাবে।''


একই কথা বলেছেন লীলাবতী হসপিটালের গাইনোকলজিস্ট নন্দিতা পালশেতকর। তাঁর কথায়, ভ্যাকসিন নিলে মহিলারা উপকৃত হবেন। ঋতুচক্রের সময়ে সুযোগ পেলে এই ভ্যাকসিন নেওয়া উচিত মহিলাদের। ঋতুকালে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতার সঙ্গে ভ্যাকসিনের কোনও যোগ নেই।


এই গুজবের তীব্র বিরোধিতা করেন ডাক্তাররা। তাঁরা বলেন, ঋতুচক্রের সঙ্গে কোভিড টিকাকরণের কোনও যোগ নেই। এটা নেহতই একটা ভিত্তিহীন দাবি। সম্প্রতি এই নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় নিউ ইয়র্ক টাইমসে। সেখানে ইয়েল স্কুল অফ মেডিসিনের অ্যালিস লু কুলিগান ও হাটার এপস্টেইন এই দাবিকে নস্যাৎ করেন। তাঁরা বলেন, ''পিরিয়ডের সঙ্গে কোভিড টিকাকরণের কোনও যোগ নেই। এরকম কোনও তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। যদি এই ধরনের দাবি সত্যি হয়, তাহলেও চিন্তা করার কিছু নেই। কারণ, কোনও মহিলার একবার অস্বাভাবিক পিরিয়ড হলে সমস্যার কিছু নেই।''


কদিন আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভাইরাল পোস্ট নিয়ে তৈরি হয় জটিলতা। যা দূর করতে আসরে নামে সরকার। টুইটারে পিআইবি-র তরফে দেওয়া হয় বিবৃতি। সেখানে বলা হয়, ঋতুকালের ৫ দিন আগে বা পরে ভ্যাকসিন নেওয়া উচিত নয় বলে যে গুজব ছড়িয়েছে, তার কোনও ভিত্তি নেই। ১৮ বছরের ঊর্ধ্বের সবাই ভ্যাকসিন নিন।