সনৎ ঝা, শিলিগুড়ি: হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে মৃত্যু। অথচ তারপরও করোনা আতঙ্কে দেহের সৎকারে এগিয়ে এলো না পরিবার৷ দেহ দেখে প্রতিবেশীরা কার্যত দূরে চলে গেলেন৷ রাতভর বৃষ্টিতে গাড়ির মধ্যে পড়ে থাকল দেহ। অভিযোগ এমনটাই। মৃত্যুর প্রায় ১২ ঘণ্টা পর দেহ নিয়ে যাওয়া হল শ্মশানে। তাও পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রচেষ্টায়। এমনই এক ঘটনার সাক্ষী থাকল শিলিগুড়ির বিনয়মোড় পাইপলাইন এলাকার বাসিন্দারা।


ওই ব্যক্তির নাম সুব্রত কর। বছর ৪৫ এর সুব্রত কর কয়েকদিন ধরে কিছু অসুস্থতা নিয়ে ভুগছিলেন। মঙ্গলবার সন্ধে থেকে প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। বাড়িতে স্ত্রী ও শিশু রয়েছে। পরিবার সূত্রে খবর, অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে টোটোয় করে ব্যক্তিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল হাসপাতালে। ততক্ষণে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন খবর পেয়ে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে এসে রাস্তা থেকেই ব্যক্তিকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে রাত ৯ টা ৪৫ মিনিট নাগাদ ব্যক্তি মারা যান। চিকিৎসকরা জানান হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে মৃত্যু হয়েছে।


জানা গিয়েছে, একটি গাড়িতে ব্যক্তির দেহ বাড়ির সামনে নিয়ে আসা হয়৷ এরপর জানানো হয় তাঁর আত্মীয়রা আসছেন। সকালে সৎকার হবে৷ এই বলে উধাও হয়ে যায় পরিবার৷ মৃতের স্ত্রী বাড়িতে ছিলেন। এদিকে রাতে প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যেও দেহ গাড়িতে করেই রাস্তায় রাখা ছিল। সকালে তা দেখে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অথচ দেহের সৎকারের জন্য প্রতিবেশীরাও এগিয়ে আসেননি৷ উল্টে গাড়িটির আশপাশে বাঁশ লাগিয়ে দেওয়া হয়। শেষমেষ খবর পেয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা আসেন৷


পুলিশ সূত্রে খবর, পরিবারের সঙ্গে তাঁরা কথা বললে জানিয়ে দেওয়া দেহের সৎকারের জন্য মৃতের কোনও আত্মীয় শ্মশানে যাবেনা। অগত্যা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মহিলা সদস্যারা দেহ নিয়ে কিরণচন্দ্র শ্মশানে যান৷ আর এই ঘটনা সামনে আসার পর সমালোচনায় সরব হয়েছেন অনেকই। চূড়ান্ত অমানবিকতার ঘটনা ঘটছে বলে সরব হয়েছেন ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যারা। পরিবারের সদস্যদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।