নয়াদিল্লি: কোভিডে মৃতের ডেথ সার্টিফিকেট লেখার কিছু নির্দিষ্ট নীতি বা গাইডলাইন থাকা উচিত। অন্যথায় এ নিয়ে বিভ্রান্তি হতে পারে। এক মামলার শুনানির প্রেক্ষিতে সোমবার এমনই মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট।


অতীতেও এই নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। করোনায় মৃত্যু ও কোমর্বিডিটিতে মৃত এই নিয়ে শুরু হয়েছিল দ্বন্দ্ব। করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় অনেকেই দাবি করে, তাদের রাজ্যে করোনায় মৃতের সংখ্যা অনেক কম। অর্থাৎ অন্যদের তুলনায় করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে সংশ্লিষ্ট রাজ্যে। যদিও বিরোধীদের অভিযোগ, করোনায় মৃতের সংখ্যা কম দেখাতেই এই নীতি নিয়েছিল সেই রাজ্য সরকারগুলি।


করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়েও উঠে এল সেই একই প্রশ্ন। এক জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে কোভিডে মৃতের ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু নিয়ে প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এদিন বেঞ্চের বিচারপতি অশোক ভূষণ ও বিচারপতি এমআর শাহ বলেন, ''বহুবার কোভিডে মৃতের ডেথ সার্টফিকেটে হার্ট অ্যাটাক বা লাং ফেলিওর লেখা হতেই পারে। এই হৃদয্ত্র বা ফুসফুসের কাজ বন্ধের পিছনে করোনার হাত রয়েছে। তাহলে আপনারা কীসের ভিত্তিতে কোভিডের ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করেছেন ?''


সম্প্রতি সব কোভিডে মৃতের পরিবারকে ৪ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি তুলে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন অ্যাডভোকেট গৌরব কুমার বনসল। তাঁর জনস্বার্থ মামলার ভিত্তিতেই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে নোটিস পাঠায় শীর্ষ আদালত। জনস্বার্থ মামলায় বনসল বলেছেন, ''বিপর্যয় মোকাবিলা আইন ২০০৫-এর ধারা ১২ অনুযায়ী বিপর্যয়ের ফলে মৃত কোনও ব্যক্তিকে ন্যূনতম সাহায্য করা ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির মৌলিক কাজ।''


১২ (তিন) ধারায় আরও বলা রয়েছে, মহামারীর ফলে কোনও ব্যক্তি মারা গেলে তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি। বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের এই ক্ষতিপূরণ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার ও আইসিএমআর-এর কাছে নির্দিষ্ট নীতি জানতে চায় সুপ্রিম কোর্ট। মহামারীর ফলে মৃতের পরিবারকে ৪ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিলে কীভাবে নীতির বাস্তবায়ন সম্ভব তাও জানতে চায় আদালত।


সুপ্রিম কোর্টের এই প্রশ্নের জবাব দিতে তিন সপ্তাহের সময়সীমা চায় কেন্দ্রীয় সরকার। যার উত্তরে কোভিডে মৃতের ডেথ সার্টিফিকেট ঘোষণায়  নির্দিষ্ট নীতি আছে কিনা তা জানতে চায় আদালত। মাত্র ১০দিনের মধ্যেই উত্তর দিতে বলা হয়েছে কেন্দ্রকে। মূলত, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলিকে কোভিডে মৃতদের পরিবারকে সামাজিক সুরক্ষা দিতে সুপ্রিম কোর্টে এই আর্জি জানিয়েছিলেন অ্যাডভোকেট গৌরব কুমার বনসল।