করোনা সত্যিই বাতাসবাহিত? কী বলছেন হু-র চিফ সায়েন্টিস্ট সৌম্যা স্বামীনাথন?

করোনার হাত থেকে বাঁচতে হার্ড ইমিউনিটি কতটা কাজে আসতে পারে? স্বামীনাথন বলেছেন, হার্ড ইমিউনিটি পেতে দীর্ঘ সময় লাগে। দ্বিতীয়ত, এটা পেতে বহু মানুষকে মরতে হবে, অসুস্থতা সকলের মধ্যে ছড়িয়ে যাবে, দীর্ঘমেয়াদি হবে লকডাউন।

Continues below advertisement
নয়াদিল্লি: ৩২টি দেশের ২৩০ জন বিজ্ঞানী জোর গলায় দাবি করেছেন, করোনাভাইরাস বায়ুবাহিত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে নিজেদের নির্দেশিকা পাল্টানোর আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা। এবার এ নিয়ে মুখ খুললেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু-র চিফ সায়েন্টিস্ট সৌম্যা স্বামীনাথন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, খুব অল্প কিছু ক্ষেত্রে করোনা জীবাণু বাতাসে বাঁচতে পারে, সংক্রমণও ঘটাতে পারে। এই যে আমরা কথা বলছি, গান গাইছি এমনকী শ্বাসপ্রশ্বাস নিচ্ছি, আমাদের মুখ থেকে অসংখ্য জলের ফোঁটা নির্গত হচ্ছে। এগুলির আকার ভিন্ন ভিন্ন। যেগুলি বড় সেগুলি ১-২ মিটারের মধ্যে মাটিতে পড়ে যায়। এই জন্যই সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং রাখা এত জরুরি।  কিন্তু যেগুলির ছোট, আকারে ৫ মাইক্রনেরও কম, তাদের বলে এরোসোল। আকার ছোট হওয়ায় সেগুলি বাতাসে আরও কিছু সময় থাকতে পারে, মাটিতে পড়তে একটু বেশি  সময় নেয় বলে।  হাওয়ায় এদিক ওদিক যেতেও পারে। ফলে অন্যত্র থাকা মানুষরা এগুলি শ্বাসের সঙ্গে গ্রহণ করতে পারেন। এধরনের করোনা সংক্রমণকে বলে বাতায়বাহিত সংক্রমণ। তবে সৌম্যা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, করোনার বায়ুবাহিত সংক্রমণ কিন্তু হামের মত সংক্রমণ নয়। হামের জীবাণু প্রকৃত অর্থেই বায়ুবাহিত, প্রাথমিকভাবে ছড়ায় বাতাস থেকে। অতএব দুই জীবাণুর চরিত্রের মধ্যে এই পার্থক্যটি মাথায় রাখতে হবে। তিনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন, কারও মুখ থেকে নির্গত হওয়ার পর ছোট জলের ফোঁটাগুলি ১০-১৫ মিনিট বাতাসে ভেসে থাকতে পারে।  সে সময় যদি কেউ ওখানে আসে, বাতাসে শ্বাসপ্রশ্বাস নেয়, তবে করোনা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না, কারণ বাতাসে ফোঁটাগুলি তখনও রয়েছে।  হু কি এখনও মনে করছে, করোনা প্রধানত মানুষ থেকেই মানুষে ছড়ায়, খুব অল্প ক্ষেত্রে বায়ুবাহিত সংক্রমণ হতে পারে? জবাবে স্বামীনাথন জানিয়েছেন, পুরনো অবস্থানেই অনড় রয়েছেন তাঁরা।  করোনা জীবাণু বায়ুবাহিত হতে পারে না এমনটা বলছেন না কিন্তু তার মানে এই নয় যে, জীবাণুটি বায়ুবাহিত। যদি সত্যিই এটি হামের মত বাতাসে ছড়াত, তাহলে এতদিনে আমরা সকলে করোনা আক্রান্ত হতাম। তিনি বলেছেন। হু-এর করোনা অতিমারী সংক্রান্ত টেকনিক্যাল হেড মারিয়া ফন কারখোভেও জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে, ভিড়ে ঠাসা, বদ্ধ, বেশি হাওয়া খেলার ব্যবস্থা নেই- এমন জায়গায় করোনা জীবাণু বায়ুবাহিত হওয়ারপ আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। করোনার হাত থেকে বাঁচতে হার্ড ইমিউনিটি কতটা কাজে আসতে পারে? স্বামীনাথন বলেছেন, হার্ড ইমিউনিটি পেতে দীর্ঘ সময় লাগে। দ্বিতীয়ত, এটা পেতে বহু মানুষকে মরতে হবে, অসুস্থতা সকলের মধ্যে ছড়িয়ে যাবে, দীর্ঘমেয়াদি হবে লকডাউন।
Continues below advertisement
Sponsored Links by Taboola