সুমন ঘড়াই, হাওড়া: চোখ রাঙাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় গুলাব। দুর্যোগ-শঙ্কায় জেলায় জেলায় প্রস্তুতি তুঙ্গে। আর দুর্যোগের পূর্বাভাসে এবার ৫ অক্টোবর পর্যন্ত সরকারি কর্মীদের সমস্ত ছুটি বাতিল করল নবান্ন। শনিবার এই মর্মে একটি নির্দেশিকাও জারি হয়েছে।
সময় যত এগোচ্ছে রাজ্যজুড়ে ততই বাড়ছে উদ্বেগ। বঙ্গোপসাগরের জঠরে তৈরি হওয়া দানবের আগমন বার্তায় ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে প্রশাসনিক তৎপড়তা। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় গুলাবের সরাসরি প্রভাব পড়বে না পড়লেও, বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া বইবে রাজ্যে।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, আগামীকাল হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে। মঙ্গল ও বুধবার কলকাতা, দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলিতে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকায় ৫০ থেকে ৬০ কিমি বেগে বইবে ঝোড়ো হাওয়া। ঘূর্ণিঝড়ের পরেই তৈরি হবে ঘূর্ণাবর্ত। নিম্নচাপ হিসেবে সেটি আছড়ে পড়বে বাংলায়।
আরও পড়ুন, 'আমি যেখানেই যাব সেখানেই বাধা, নিজেরা এদিক-ওদিক ঘুরবে', রোম যাত্রা বাতিলে মোদিকে তোপ মমতার
সূত্রের খবর, আগামীকাল বিকেলে ওড়িশার গোপালপুর ও অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমের মাঝে কলিঙ্গপত্তনমের কাছে স্থলভাগে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড় গুলাব। আবহাওয়া দফতর ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা জারি করার পরই তৎপড় হয়ে উঠেছে লালবাজার। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশেষ দল গড়ল কলকাতা পুলিশ। দলে থাকছেন কলকাতা পুরসভা, পূর্ত দফতর, দমকল ও সিইএসসি-র প্রতিনিধিরা। লালবাজারের কন্ট্রোল রুমে খোলা হয়েছে ইউনিফায়েড কম্যান্ড সেন্টার। কলকাতা পুলিশের তরফে নোডাল অফিসারের দায়িত্বে রয়েছেন অ্যাডিশনাল পুলিশ কমিশনার তন্ময় রায়চৌধুরী। থাকছেন অন্য পুলিশ আধিকারিকরাও।
ভবানীপুর, কালীঘাট, আলিপুর, ওয়াটগঞ্জ, একবালপুর, এই পাঁচটি এলাকায় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ২২টি দলকে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। দুর্গতদের দ্রুত উদ্ধারের ব্যবস্থা, বিপজ্জনক বাড়ির তালিকা প্রস্তুত, ত্রাণ শিবিরের জন্য পোশাক ও খাবার মজুত রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, কলকাতা পুরসভার সহযোগিতায় জল নিকাশি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা, নৌকা ও ক্রেন মজুত রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে কলকাতা পুলিশের তরফে। একইসঙ্গে রিভার ট্রাফিক পুলিশকেও সতর্ক থাকার পাশাপাশি গঙ্গায় নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে।