Cyclone Yaas in Bengal: ঘোড়ামারার যন্ত্রনা- সবাইকে সাবধান করে জলোচ্ছ্বাসে মৃত বৃদ্ধ, খরস্রোতে বাবার হাত ফসকে নিখোঁজ শিশু

প্রকৃতির রুদ্ররোষ কত নির্মম হতে পারে, তা মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা দিয়ে উপলব্ধি করছে ঘোড়ামারার দুটি পরিবার। বাচ্চু জানা আর রুল আমিন গায়েন।

Continues below advertisement

জয়দীপ হালদার, ঘোড়ামারা দ্বীপ: সবাইকে সাবধান করতে গিয়ে কোথাও যেন নিজেকে সাবধান করতে ভুলে গিয়েছিলেন। তাই তীব্র জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়েছিলেন বৃদ্ধ। কোথাও বাবার হাত ফসকে খরস্রোতে তলিয়ে গিয়েছে দেড় বছরের সন্তান। প্রথমজন মৃত, দ্বিতীয়জন এখনও নিখোঁজ। পিতাহারা পুত্র আর নিখোঁজ পুত্রের অপেক্ষায় বাবা। গুমরে মরছে সাগরের ঘোড়ামারা দ্বীপ

Continues below advertisement

প্রকৃতির রুদ্ররোষ কত নির্মম হতে পারে, তা মর্মান্তিক অভিজ্ঞতা দিয়ে উপলব্ধি করছে ঘোড়ামারার দুটি পরিবার। বাচ্চু জানা আর রুল আমিন গায়েন। দুজনের জীবনের ওপর দিয়ে আক্ষরিক অর্থেই ঘূর্ণিঝড় বইয়ে দিয়েছে ইয়াস। দুই পরিবারই সাগর ব্লকের ঘোড়ামার দ্বীপের বাসিন্দা।

বঙ্গোপসাগর আর মুড়িগঙ্গা নদী দিয়ে ঘেরা ঘোড়ামারা দ্বীপ। ৫ বছর আগের প্রশাসনিক তথ্য অনুযায়ী, ১৩০ বর্গকিলোমিটারের দ্বীপ মাত্র ২৫ বর্গকিলোমিটারে এসে ঠেকেছে। যার মধ্যে ১৬ বর্গকিলোমিটার এলাকা উপকূলীয় অঞ্চলে। ঢেউয়ের মাথায় বাস করা মানুষগুলির মধ্যে একটি পরিবার হল জানা পরিবার। গৃহকর্তা ছিলেন ৭৫ বছরের বৃন্দাবন জানা।

পরিবার সূত্রে খবর, ২৬ মে ইয়াস আছড়ে পড়ার দিন সকালে, ঢেউ দেখে সবাইকে সতর্ক করতে বেরোন তিনি। শেষ পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে যান নিজেই। পরে ভেসে ওঠে তাঁর মৃতদেহ। 

মৃতের ছেলে বাচ্চু জানা বলেছেন, বাবা সকালে চা খেতে বেরিয়েছিল। জোয়ার দেখে সবাইকে বলছিল বেরোতে। তারপর বাঁধের দিকে চলে যান। এরপর ওখানকার একজন খবর দেয়, বাবা তলিয়ে গিয়েছে।এ

কদিকে, বাবাকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ ছেলে, অন্যদিকে, নিখোঁজ ছেলের পথ চেয়ে এক বাবা।২৬ মে-র ভরা কটালে গ্রামে জল ঢুকতে দেখে ঘর ছাড়তে শুরু করে রুল আমিন গায়েনের পরিবার। পরিবার সূত্রে খবর, সেই সময়, জলের খরস্রোতে বাবার হাত ফসকে তলিয়ে যায় তাঁর দেড় বছরের সন্তান। এখনও সে নিখোঁজ। তল্লাশি চলছে।  নিখোঁজ শিশুর বাবা রুল আমিন গায়েন বলেছেন,  যখন প্রচুর জল চলে আসে, ঘর থেকে বেরোচ্ছিলাম, বড় ছেলেও ছিল। ছোট ছেলে জলের তোড়ে হাত ছেড়ে বেরিয়ে যায়। এখনও খুঁজে পাচ্ছি না।

ক্ষয়িষ্ণু ঘোড়ামারা দ্বীপে এখন খাবার আর পানীয় জলের চরম সঙ্কট। অসহায় পরিবারগুলির মুখে অন্ন তুলে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সুন্দরবন জেলা পুলিশ। প্রায় এক হাজার মানুষকে রান্না করে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছেন আইনের রক্ষকরা। 

একদিকে, বিপর্যয়ের ক্ষত, একদিকে স্বজন হারানোর শোক, আর একদিকে সন্তানকে হারিয়ে ফেলার আশঙ্কা। গুমরে কাঁদছে ঘোড়ামারা।

Continues below advertisement
Sponsored Links by Taboola