নয়াদিল্লি: মৃত্য়ুদণ্ড অবলুপ্ত হয়েছে বহু দেশে। ভারতেও কি সেই দিন আসবে? এই প্রশ্ন নতুন নয়। মৃত্যুদণ্ড অবলুপ্ত না হলেও, তাকে কম যন্ত্রণাদায়ক করার পথে এগোল কেন্দ্র। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে, ফাঁসির সাজা কার্যকর করার সিদ্ধান্ত বিবেচনা করে দেতে সম্মত হল কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার। এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিটে গড়ে, বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখার কথা জানাল তারা। 


মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতে এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান জানাল কেন্দ্রীয় সরকার। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি জেবি পর্দিওয়ালার ডিভিশন বেঞ্চে লিখিত নোট জমা দেন অ্যাটর্নি জেনারেল আর বেঙ্কটরামানি। কেন্দ্রের হয়ে তিনি জানান, সুপ্রিম কোর্টের সুপারিশ বিবেচনা করে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি গড়া হচ্ছে। সেখানে বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখা হবে।


বিশেষজ্ঞ কমিটিতে কারা থাকবেন, সেই নাম চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল। যথা সময়ে এ নিয়ে আদালতে রিপোর্ট দেবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। তাতে আদালত বলে, "অ্যাটর্নি জেনারেল জানিয়েছেন, কমিটি গড়ার প্রক্রিয়া চলছে। এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট দিন বেঁধে দেবে আদালত, তবে গ্রীষ্মকালীন ছুটির মেয়াদ অতিক্রান্ত হলে।"


মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ক্ষেত্রে ফাঁসিতে ঝোলানো কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে সুপ্রিম কোর্টে। তাতে গত ২১ মার্চ বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার প্রস্তাব দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিটি গড়ার কথা বলা হয়, যাতে ফাঁসিতে ঝোলানোর সিদ্ধান্ত মৃত্যদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির অবস্থার সঙ্গে আদৌ সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা, কোনও ভাবে মৃত্যুদণ্ডের সাজাকে কম যন্ত্রণাদায়ক করে তোলা যায় কিনা, পর্যালোচনা করে দেখা যায়। এ নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠের কী মত, সেই সংক্রান্ত তথ্যও আদালতে জমা দিতে বলা হয়।


মৃত্যদণ্ডের সাজা কার্যকর করার ক্ষেত্রে ফাঁসিতে ঝোলানো আদৌ যুক্তিযুক্ত কিনা, এ নিয়ে ২০১৭ সালে আদালতে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন আইনজীবী ঋষি মালহোত্র। ভারতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ক্ষেত্রে ফাঁসিতে ঝোলানোর যে চিরাচরিত প্রথা রয়েছে, তা অবলুপ্ত করার আবেদন জানান তিনি। মৃত্যুদণ্ড যদি কার্যকর করতেই হয়, সে ক্ষেত্রে প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশন, গুলি ছুড়ে হত্যা, তড়িদাহত অথবা গ্যাস চেম্বারের মতো তুলনামূলক কম যন্ত্রণাদায়ক পন্থা রাখা যেতে পারে বলে সওয়াল করেন তিনি। সেই প্রেক্ষিতেই কেন্দ্রকে বিষয়টি বিবেচনা করে দেখতে নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।