ইস্তানবুল: বিপর্যয়ের (earthquake disaster) ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে। ধ্বংসস্তূপের (rubble) নিচ থেকে প্রাণের ধুকপুকুনি যতটুকু শোনা যাচ্ছিল, এখন তার সিংহভাগই স্তব্ধ। মৃতের (death toll) সংখ্য়া ১৫ হাজার পেরিয়ে গিয়েছে। তুষারপাত (blizzard) ও হাড় কাঁপানো ঠান্ডার সঙ্গে চোখে চোখ রেখে লড়াই করে যাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা (rescuers)। কিন্তু ভয়াবহতা এমন জায়গায় পৌঁছল কেন?  তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোগান মেনে নিলেন, 'গাফিলতি' ছিল।


'গাফিলতি কবুল'...
ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে সাহায্যের জন্য় আপ্রাণ আর্তনাদ করছেন কাছের মানুষগুলো। কিন্তু সাহায্য় পৌঁছতে বেশ কিছুটা সময় লাগবে। একসময় থমকে গেল আর্তনাদ, নড়াচড়াও স্তব্ধ। তুরস্ক ও সিরিয়ার অগুনতি ঠাঁইনাড়া মানুষের অভিজ্ঞতা এখন এরকম। যাঁরা বেঁচে গিয়েছেন, তাঁরা খাবার ও আশ্রয়ের জন্য় ইতিউতি ঘুরছেন। ফাঁকতালে পরিজনদের খোঁজার চেষ্টা, বরাতজোরে খোঁজ পেলেও চোখের সামনে তাঁদের শেষ হয়ে যেতে দেখেছেন এমন মানুষ এখন অজস্র। হাতায়-র বাসিন্দা, পেশায় কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক, সেমাইয়ের কোবান বলেন, 'আমার ভাইপো, ভাইয়ের বউ ও তাঁর বোন সকলেই ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে ছিল। এখন আর তাঁদের কোনও নড়াচড়া নেই। ওঁদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করছি। কথা বলার চেষ্টা করছি। কিন্তু কোনও জবাব নেই।' উদ্ধারকারীরা অবশ্য হাল ছাড়েননি। চেষ্টা করছেন যত বেশি সংখ্যক মানুষের প্রাণ বাঁচানো যায়। কিন্তু এমন পরিস্থিতি হল কেন? তীব্র চাপের মুখে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান মানলেন, 'আলবাৎ গাফিলতি ছিল। কেন এমন ঘটেছে সেটা তো স্পষ্ট। এই ধরনের বিপর্যয়ের জন্য কখনওই পুরোপুরি প্রস্তুত থাকা সম্ভব নয়।'


প্রেক্ষাপট...
প্রথমবার রিখটার স্কেলে ৭.৮। তারপর ৭.৬ ও তৃতীয়বার ৬.০। পরপর তিনটি ছোবল দিয়েছে দিয়েছে ভূমিকম্প। তুরস্ক যে ভূমিকম্পের প্রাণঘাতী আক্রমণের জেরে কার্যত পরিণত হয়েছে মৃত্যুনগরীতে। শুধু তুরস্কই নয়, প্রভাব পড়েছে সিরিয়াতেও। ভূমিকম্পের কেন্দ্রবিন্দু ছিল তুরস্কের গাজিয়ানটেপ এলাকা। যা সিরিয়া সীমান্তের কাছাকাছি হওয়ায় প্রভাব পড়েছে সেখানেও। শুধু তুরস্ক বা সিরিয়াই নয়, প্রবল ভূমিকম্পের মাত্রা নাড়া দিয়েছে পার্শ্ববর্তী লেবানন, ইজরায়েলের মতো দেশকেও। তুরস্ক অঞ্চলে এহেন জোরাল ভূমিকম্পের আঘাত ও তার জেরে এহেন মৃত্যুমিছিল আগে কখনও হয়েছে কি না, মনে করতে পারছেন না কেউই। সময় যত এগোচ্ছে ততই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। যত বেশি বিভিন্ন ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করা হচ্ছে, ততই বেরিয়ে আসছে নিস্তেজ, নিথর মানুষদের দেহ। চারিদিকে শুধু কান্না, স্বজন হারানোর শোক ও ধ্বংসস্তূপের ধুলোকণা মেশানো ভারী এক বাতাস। বিপদে পাশে দাঁড়িয়েছে ভারত। ত্রাণ পাঠিয়েছে নয়াদিল্লি। এদিকে রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে সাহায্য়ের আর্জি জানিয়েছে সিরিয়াও। 


আরও পড়ুন:থরে থরে সাজানো নোট! ইডির অভিযানে উদ্ধার এত টাকা কার?