নয়াদিল্লি : ভারত-চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (Line of Actual Control) বরাবর চাপানউতোর অব্যাহত। PLA বাহিনী মোতায়েন করায় সেখানে অশান্তির আশঙ্কা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে LAC-র নর্দার্ন সেক্টর (Northern Sector) বরাবর সেনাকে কড়া নজরদারির নির্দেশ দিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং (Defence Minister Rajnath Singh)। 


আর্মি কম্যান্ডার কনফারেন্সে বক্তব্য রাখার সময় প্রতিরক্ষামন্ত্রী কোনও নির্দিষ্ট ঘটনার উল্লেখ না করেই গোটা বিশ্বজুড়ে দ্রুত পরিবর্তনশীল ভৌগলিক-রাজনৈতিক অবস্থার দিকে সশস্ত্র বাহিনীকে নজর রাখতে বলেন। সেই অনুযায়ী, বাহিনী যাতে পরিকল্পনা ও কৌশল ঠিক করে রাখতে পারে তার নির্দেশও দেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। পিটিআই সূত্রের খবর।


কেন্দ্রীয়মন্ত্রী বলেন, নর্দার্ন সেক্টরে PLA বাহিনী মোতায়েনের কারণে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক রয়েছে সেখানে। আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে, মূলত ভারতীয় সেনাকে ক্রমাগত সেখানে নজরদারি চালিয়ে যেতে হবে। যাতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় নিরাপত্তা বজায় থাকে।


পূর্ব লাদাখে ভারত-চিনের দীর্ঘ তিন বছরের টানাপোড়েনের প্রেক্ষাপটে এই মন্তব্য রাজনাথ সিংয়ের। প্রতিরক্ষামন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, "দেশের নিরাপত্তাই হল এই সরকারের অগ্রাধিকার। আমি আপনাদের নিশ্চিত করছি, সীমান্তে কর্মরত প্রত্যেক জওয়ানকে সবথেকে ভাল অস্ত্র এবং সুযোগ সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করবে এই সরকার।" 


সোমবার শুরু হয় পাঁচ দিনের আর্মি কম্যান্ডারস কনফারেন্স। সেখানে পাকিস্তান  ও চিন সীমান্তে নিরাপত্তা সংক্রান্ত যে চ্যালেঞ্জ রয়েছে তা নিয়ে চর্চা হয়। জম্মু ও কাশ্মীরের উল্লেখ করে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, সেখানে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে এখন। তাছাড়া কেন্দ্রশাসিত এই অঞ্চলে জঙ্গি কার্যকলাপ তাৎপর্যপূর্ণভাবে কমেছে। উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতেও, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় প্রচুর উন্নতি হয়েছে। ভারতীয় সেনার একাধিক অপারেশনের জেরে এটা সম্ভব হয়েছে। তা সত্ত্বেও রাষ্ট্রদোহী সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে আমাদের নজরদারি চালিয়ে যেতে হবে। যারা সরকারের শান্তি ফেরানোর প্রচেষ্টাকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে তাদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।


প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, প্রত্যেক জওয়ানের কল্যাণ ও ভাল থাকা এবং অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মীদের ভাল রাখাও এই সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। শুধু সশস্ত্র বাহিনীর ভালর কথাই ভাবছে না সরকার, এর পাশাপাশি বর্ষীয়ান এবং তাঁদের পরিবারের কল্যাণের বিষয়েও সম্পূর্ণ নিবেদিত এই সরকার।


প্রসঙ্গত, 'ভারত-চিন সীমান্তে বেজিং (Beijing) এমন কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে যা প্ররোচনামূলক।' এক প্রশ্নের জবাবে দিনকয়েক আগে এমনই মন্তব্য করেন হোয়াইট হাউসের (White House) এক শীর্ষ আধিকারিক। 'মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কি ভারতের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে উন্মুখ ?' এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় আমেরিকার প্রেসিডেন্টের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট ও ভারত-প্রশান্ত মহাসারগীয় অঞ্চলের মার্কিন কো-অর্ডিনেটর কার্ট ক্যাম্পবেল বলেন, ভারত আমেরিকার মিত্ররাষ্ট্র নয় এবং তা হবেও না।


তবে তিনি এও বলেন, এর অর্থ এই নয় যে, আমরা ঘনিষ্ঠ সঙ্গী হব না বা বিভিন্ন জিনিস ভাগ করে নেব না। আমাদের বুঝতে হবে যে, বিশ্বমঞ্চে ভারত বিশাল রাষ্ট্র হিসাবে তাদের ভূমিকা পালন করবে। আমরা সেই বিষয়টাকেই উৎসাহ দিতে চাই। সম্পর্ক আরও গভীর করতে চাই। যা ইতিমধ্যেই মজবুত, সম্ভবত বিশ্ব মানচিত্রে আমেরিকার সবথেকে শক্তিশালী সঙ্গী।