নয়াদিল্লি: বৈবাহিক ধর্ষণ কি অপরাধ? এই সংক্রান্ত একটি মামলায় রায় নিয়ে ঐক্যমত হল না দিল্লি হাইকোর্টের (Delhi High Court) ডিভিশন বেঞ্চ (Division Bench)। রায় নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হলেন বিচারপতিরা। ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি রাজীব শাকধীর (Justice Rajiv Shakdher) বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ বলে অভিহিত করার পক্ষে রায় দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি এটাও জানিয়েছেন, আইন অনুযায়ী একজন যৌনকর্মীর যৌন সম্পর্কে না বলার অধিকার রয়েছে, কিন্তু একজন বিবাহিত মহিলার এই অধিকার নেই। এই বৈষম্যের বিষয়টিও তুলে ধরেছেন তিনি।


কী বলেছেন বিচারপতি:
শুনানির সময় বিচারপতি শাকধীর বলেছেন, ভারতীয় দন্ডবিধি অনুযায়ী একজন বিবাহিত মহিলার তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে অসম্মতি সত্ত্বেও যৌন সম্পর্ক স্থাপন করার অভিযোগ আনার জায়গা নেই। যা ওই মহিলার অধিকারকে খর্ব করে। এটি একটি গুরুতর সমস্যা। পিটিআই সূত্রে খবর, বিচারপতি শাকধীর বলেছেন, আইন অনুযায়ী, যৌনকর্মী এবং স্বামীর থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছেন এমন মহিলারা জোর করে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের কারণে ধর্ষণের অভিযোগ আনতে পারেন। কিন্তু বিবাহিত মহিলারা পারেন না। ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি রাজীব শাকধীর বলেছেন, সম্মতি না দেওয়ার অধিকার একজন নারীর জীবনের এবং স্বাধীনতার অধিকার ( right to life and liberty)। কিন্তু বৈবাহিক ধর্ষণের মতো পরিস্থিতিতে (marital rape exception) কোনও স্ত্রী তাঁর স্বামীকে না বলার জায়গায় নেই। যা নারীর স্বাধীনতার অভাবকেই প্রকট (only exacerbate the lack of autonomy and sexual agency which stands embedded) করে তোলে। দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি বলেছেন, marital rape exception-বিষয়টি নারীর অধিকারকেই খর্ব করে। বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধের তালিকায় আনার স্বপক্ষে রায় দিয়ে বিচারপতি এটাও বুঝিয়েছেন যে, স্বামী ধর্ষণ করলে তার ক্ষত, অপমান, অভিঘাত বা যন্ত্রণা কিছুমাত্র কম হয় না। বৈবাহিক ধর্ষণের কারণে যা শারীরিক যন্ত্রণা হয় তার চেয়ে অনেক অনেক বেশি মানসিক যন্ত্রণার শিকার হন কোনও নারী।


এবার সুপ্রিম কোর্টে:
বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধের তালিকায় আনার বিষয়ে দিল্লি হাইকোর্ট দ্বিধাবিভক্ত রায় দিয়ে বলেছে যে মামলাকারীরা বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারে। সেই মামলা হলে এবার দেশের শীর্ষ আদালতে বিষয়টি নিয়ে শুনানি হবে।


আরও পড়ুন: আট বছরে রেকর্ড মূল্যস্ফীতি! কীভাবে চলবে সংসার?