নয়াদিল্লি : প্রথমে খুন। তারপর দেহকে ৩৫ টুকরো করা। তারপরও পরিচয় যাতে বোঝা না যায়, সেটা নিশ্চিত করতে প্রেমিকা শ্রদ্ধা ওয়াকারের (Shraddha Walkar) মুখ আগুনে পুড়িয়েছিল আফতাব আমিন পুনাওয়ালা (Aftab Ameen Poonawala) !
ফ্রিজ কিনে এনে প্রেমিকার খণ্ড-বিখণ্ড দেহ তাতে ঢুকিয়ে রেখে তারপর রোজ রাতে চলত সেগুলো জঙ্গলে ফেলে দেওয়ার কাজ। দিল্লি খুন-কাণ্ডে যত তথ্য সামনে উঠে আসছে, ততই যেন ঘটনার নৃশংসা দেখে শিউরে উঠছে দেশ। দিল্লি পুলিশ সূত্রে এর মাঝেই উঠে এসেছে নতুন তথ্য। প্রেমিকার পরিচয় যাতে বোঝা না যায়, সেটা নিশ্চিত করতে খুনের পর দেহ কুচি-কুচি কেটে ফেলে শ্রদ্ধার মুখ পুড়িয়ে দিয়েছিল আফতাব।
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, 'মুম্বইয়ে এক ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে আলাপ হয় দুই জনের। তিন বছর ধরে তাঁরা লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন এবং দিল্লিতে এসে থাকতে শুরু করেন। দিল্লিতে চলে আসার পরই শ্রদ্ধা ওই যুবককে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন।' পুলিশের তরফে আরও জানানো হয়েছে যে 'দুইজনের মধ্যে প্রায়ই বিয়ে নিয়ে সমস্যা হত এবং তা নিয়ন্ত্রণের বাইরেও চলে যেত। ১৮ মে-র এই নির্দিষ্ট ঘটনায় নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে প্রেমিকাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে যুবক। অভিযুক্ত জানিয়েছে যে সে প্রেমিকার দেহ টুকরো করে এবং আশেপাশে ছত্রপুর এনক্লেভের জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় তা ফেলে দিয়ে আসে। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে।'
আরও পড়ুন- ঠান্ডা মাথায় খুন! আগে থেকে চেনা যায়? আদৌ সম্ভব? কী বলছেন মনোবিদ?
সূত্রের খবর, শ্রদ্ধার আগেও একাধিক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল অভিযুক্তের। শ্রদ্ধাকে খুন করার আগে সে একাধিক ক্রাইম সিনেমা ও ওয়েব সিরিজ দেখেছিলেন, যার মধ্যে আমেরিকান ক্রাইম ড্রামা সিরিজ 'ডেক্সটার'ও ছিল।
তদন্তের শুরুর দিকে, মৃতার শেষ লোকেশন পাওয়া যায় দিল্লিতে। তার ওপর ভিত্তি করেই মামলাটি দিল্লি পুলিশের কাছে হস্তান্তরিত করা হয়। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২, ২০১ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে।
জানা গেছে, প্রেমিকার দেহাংশ রাখার জন্য একটি ফ্রিজও কেনে অভিযুক্ত। এরপর দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় দেহের একাধিক অংশের নিষ্পত্তি করতে শুরু করে সে। আগামী ১৮ দিন ধরে রাতের অন্ধকারে এই কাজ করে সে। সূত্রের খবর, আফতাল প্রত্যেকদিন সেই ঘরেই ঘুমোতেন, যেখানে শ্রদ্ধার দেহ টুকরো করে রেখেছিলেন। প্রত্যেকটা টুকরোর নিষ্পত্তি করার পর ফ্রিজটা পরিষ্কারও করে সে।
অভিযুক্তের ভাড়া ফ্ল্যাট থেকে পুলিশ বেশ কিছু হাড়ের নমুনাও জোগাড় করেছেন। শরীরের বাকি অংশ উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।