কলকাতা: অসম সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে ট্যুইট করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, সহযোগিতামূলক ও সাংবিধানিক অবস্থান গ্রহণ করুন। পাশাপাশি কোচবিহারের জেলাশাসক, এসপি-র বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি।
তিনি ট্যুইটারে লেখেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অনুরোধ, সংঘাতের পথ ছেড়ে সহযোগিতামূলক ও সাংবিধানিক অবস্থান গ্রহণ করুন। এতেই গণতন্ত্রের বিকাশ হবে। আইনের শাসন জোরদার করুন এবং মানুষের স্বার্থে কাজ করুন।
একইসঙ্গে ট্যুইটে তিনি লিখেছেন, কোচবিহারে জেলাশাসক, এসপি অপ্রতিক্রিয়াশীল আচরণ করেছেন। সেখানে অসমে যাবতীয় বিধি মেনে রনপাগলিতে উপস্থিত রয়েছেন ডিভিশনাল কমিশনার, স্পেশাল ডিজিপি, জেলাশাসক এবং এসপি।
ভোট পরবর্তী অশান্তির অভিযোগ সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে গতকাল কোচবিহারে যান রাজ্যপাল। মাথাভাঙা, শীতলকুচি, দিনহাটা থেকে সিতাই। বিজেপির তোলা ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার বিজেপির নেতাদের সঙ্গে কোচবিহারের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন রাজ্যপাল।
গতকাল কোচবিহারের দিনহাটায় রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় পৌঁছতেই শুরু হয় গোব্যাক স্লোগান। একদল লোক জড়ো হয়ে টানা গোব্যাক স্লোগান তোলেন। সঙ্গে 'বিজেপির-রাজ্যপাল' বলেও স্লোগান দেন তারা। যে ঘটনার পর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকার পরিস্থিতি। ঘটনাস্থলে কিছুক্ষণের মধ্যে দিনহাটা থানার আইসি এসে পৌঁছলে তাঁকে ধমকও দেন রাজ্যপাল। রাজ্যপালের কনভয় কোচবিহারের দিকে যাবে বলে তাঁর কাছে খবর ছিল বলে আইসি জানাতেই রাজ্যপালের চড়া ধমক, 'সব অজুহাত রয়েছে শুধু আইন-শৃঙ্খলা সামলাতে না পারার কোনও অজুহাত নেই।'
উল্লেখ্য, তাঁর সফরের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল তৃণমূল। সফরে আপত্তি জানিয়ে চিঠিও দেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার রাজ্যপালকে চিঠি লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যে চিঠিতে তিনি দাবি করেন, সরকারি ‘বিধি এবং রীতি’ ভেঙে একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে শীতলকুচি-সহ কোচবিহারের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্যপাল। পাল্টা রাজ্যপালের দাবি, সংবিধানের ১৫৯ ধারা অনুযায়ী সম্পূর্ণ সাধ্য ও ক্ষমতা অনুযায়ী সংবিধান ও আইন রক্ষা করব। মুখ্যমন্ত্রী পাল্টা চিঠিতে তিনি লেখেন, পশ্চিমবঙ্গের মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করব। আমার শপথবাক্য অনুযায়ী যা করা উচিত, আমি তার সবটাই করব।
এদিকে গতকাল কোচবিহার সফরের পর আজ অসমের শ্রীরামপুরে বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে দেখা করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক ও অন্য বিজেপি নেতারা। বিজেপির দাবি, রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার পর তাদের বেশ কিছু কর্মী অসমে আশ্রয় নিয়েছেন। রাজ্যপাল আজ তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন।