কলকাতা: ভূত চতুর্দশী পেরোলেই কালীপুজো (Kalipujo)। আর কালীপুজো বলতেই আতসবাজির (Firecrackers) খেলা। যদিও এবার  কালীপুজোয় পোড়ানো যাবে শুধুমাত্র পরিবেশবান্ধব বাজি, এমনটাই জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। অতিমারি পরিস্থিতি এবং দূষণে কথা মাথা রেখেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। এই নির্দেশের পর দোকানে দোকানে বাড়ছে 'সবুজ বাজি' (Green firecrackers) কেনার হিড়িক। বাজি বিক্রির নিষেধাজ্ঞার পর মুষড়ে পরেছিলেন বিক্রেতা তবে এই সবুজ বাজি বিক্রির নির্দেশে খুশি তারাও।
 
সাধারণ আতসবাজি ও সবুজ বাজির পার্থক্য কোথায়? 


ন্যাশনাল এনভায়োরমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এর তরফে এই 'গ্রিন ক্র্যাকার্স' এর বিষয়ে জানান হয়েছে। বলা হয়েছে। এতে ক্ষতিকারক রাসায়নিক থাকে না। এর মানে হল বায়ু দূষণ হ্রাস পায় এই বাজি পোড়ানো হলেও। এই পরিবেশ বান্ধব বাজিগুলি আদতে পরিবেশের উপর কম প্রভাব ফেলে, হাঁপানি, শ্বাসকষ্টের মত সমস্যাও কম হয়। 


কী থাকে এই বাজিতে?


বলা হয়েছে যে এতে অ্যালুমিনিয়াম, বেরিয়াম, পটাসিয়াম নাইট্রেট বা কার্বন থাকে না। এর জন্যই এগুলি 'পরিবেশবান্ধব' এর তকমা পেয়েছে। তামিলনাড়ু ফায়ারওয়ার্কস অ্যান্ড অ্যামোরসেস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পি গণেশানের মতে, সবুজ বাজি বাকি বাজিদের তুলনায় ৩০ শতাংশ কম দূষণ করে। সাধারণ বাজিতে থাকে বেরিয়াম নাইট্রেট। যা ঘন ধোঁয়া তৈরি করে, বাড়ে দূষণ। 


আরও পড়ুন, 'রুদ্রমূর্তি থেকে সংহাররূপী', কালীর নামেই লুকিয়ে আছে পুরাণের ভয়ঙ্কর সব কাহিনি


শুধু তাই নয় এক একটি শব্দবাজিতে শব্দদূষণও হয়। প্রায় ১৬০ ডেসিবেল আওয়াজ হয় এক একটি বাজি ফাটলে। সেখানে সবুজ বাজিতে আওয়াজ হতে পারে ১১০ ডেসিবেল। যদিও সাধারণ বাজিগুলির থেকে এই সবুজ বাজি অনেকটাই ব্যয়বহুল। কিন্তু দেশের শীর্ষ আদালতের নিয়ম মেনে এ বছর বাজি ফাটালে পরিবেশবান্ধব বাজি ফাটান উচিত বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। 


এদিকে, কালীপুজোর আগের দিন বাজি সংক্রান্ত মামলায় এই নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার বিচারপতি রাজশেখর মান্থা ও বিচারপতি কে ডি ভুটিয়া-র বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, এখন নতুন করে কোনও নির্দেশিকা দিলে রাজ্য সরকারের পক্ষে তা বাস্তবায়িত করা সম্ভব নয়। তাই সুপ্রিম কোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে, সেটাই বহাল থাকবে। রাজ্যের সর্বত্র পরিবেশবান্ধব বাজিই ব্যবহার হবে, তা নিশ্চিত করা রাজ্যের পক্ষে সম্ভব নয়।


এরপরই হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, বাজির অপব্যবহার বন্ধ করতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে রাজ্য সরকারকে।হাইকোর্ট এও মনে করিয়ে দেয়, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশ অনুযায়ী, রাত ৮টা থেকে রাত ১০টা অবধি পরিবেশবান্ধব বাজি পোড়ানো যাবে।