পার্থপ্রতিম ঘোষ, উত্তরকাশী: উত্তরকাশীর উদ্ধারকাজে (Uttarkashi Tunnel Rescue) শেষ পর্যন্ত ত্রাতার ভূমিকা নিয়েছে 'র্যাট হোল মাইনিং' (Rat Whole Mining) পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে কীভাবে মাটি খোঁড়া হয়? সোমবার থেকে প্রায় ২৪ ঘণ্টা নাওয়া-খাওয়া ভুলে, কী কী করেছিলেন? বিস্তারিত জানিয়েছেন র্যাট হোল মাইনার্স।
হার মেনেছিল যন্ত্র...
শেষ মুহূর্তে কাজে আসেনি কোনও অত্যাধুনিক সরঞ্জাম। উত্তরকাশীর সিল্কয়ারা-বারকোট সুড়ঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিকদের উদ্ধারে শেষ পর্যন্ত কাজে এসেছে, 'র্যাট হোল মাইনিং' পদ্ধতি। শুক্রবার, পরিস্থিতি যখন নাগালের বাইরে চলে যায়, তখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় উদ্ধার কাজে পাথর কাটার শ্রমিকদের আনা হবে। যাকে বলে, র্যাট হোল মাইনিং, মানে ইঁদুরের মতো গর্ত খুঁড়তে খুঁড়তে এগোনো। এই 'র্যাট হোল মাইনিং' খুবই ঝুঁকিপূর্ণ! এই পদ্ধতিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ন্য়াশনাল গ্রিন ট্রাইবুনাল। উত্তরপ্রদেশ এবং দিল্লি থেকে এয়ারলিফট করে ১২ জন র্যাট হোল মাইনার্সকে আনা হয়।সোমবার দুপুর তিনটে থেকে তাঁরা কাজ শুরু করেন। আর তার, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই চলে এল সাফল্য। র্যাট হোল মাইনার্সের সদস্য ওয়াকিল হাসান বললেন, 'ইঁদুর যেমন মাটি কাটে, পিছনে ফেলে দেয়, আমরাও তেমনই করছিলাম।' প্রায় ৪৮ মিটার খননের পর, বার বার যে বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছিল, যে ১০ থেকে ১২ মিটার তখনও খোঁড়া বাকি ছিল, সেটাই হাতে করে সম্পূর্ণ করেন এই মানুষগুলো। এই ১২ জন র্যাট হোল মাইনার্সকে ৫০ হাজার টাকা করে সাম্মানিক দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে উত্তরাখণ্ড সরকার। কাজটি করেও খুশি প্রত্যেকে। ৪১ জন শ্রমিককে বাঁচাতে পেরে সকলের মুখে চওড়া হাসি।
দুরন্ত উদ্ধার...
উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারার সুড়ঙ্গে আটকে থাকা ৪১ জন শ্রমিককে ১৭ দিন পর যে ভাবে উদ্ধার করে আনা হয়, তা হার মানিয়ে দিতে পারে যে কোনও হলিউডি থ্রিলারকেও। প্রত্যেক মুহূর্তে টানটান স্নায়ুযুদ্ধ চলে। দিনদুয়েক আগে প্রথম মুক্তির আলো দেখা যায়। প্রথম ধাপে বের করা হয় ২ জন শ্রমিককে। একটু পরে খবর আসে ২০ জনকে উদ্ধার করা যায়। দেখতে দেখতে বাড়তে থাকা উদ্ধার হওয়া শ্রমিকের সংখ্যা। আধ ঘণ্টার কিছু বেশি সময়ে উদ্ধার হন ৪১ জন শ্রমিকই। টানেলের সামনেই তৈরি ছিল অ্যাম্বুল্যান্স। উদ্ধার হওয়া শ্রমিকদের নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় হাসপাতালে। সঙ্কটজনক শ্রমিকদের নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল হৃষিকেশ এইমসে। সবটারই সৌজন্যে এই 'র্যাট হোল মাইনিং' ।