বেজিং : সাম্প্রতিক সময়ে সীমান্তে ভারত-চিন সেনা-সংঘাত দেখা গেছে একাধিক বার। গালওয়ান-ডোকলাম থেকে তাওয়াং। একাধিকবার চিন সেনাকে রুখে দিয়েছে ভারতীয় বাহিনী। পরিস্থিতি সাময়িক স্থিতিশীল হলেও, পরে আবার উত্তেজনা ছড়িয়েছে। এই আবহে এবার পূর্ব লাদাখে ভারত-চিন সীমান্তে কর্তব্যরত চিন সেনার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বললেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (Xi Jinping)। তাদের যুদ্ধ-প্রস্তুতির কথা জানতে চান তিনি। পিপলস লিবারেশন আর্মির (People's Liberation Army) সদর দফতর থেকে বাহিনীর সঙ্গে কথা হয় শি-র। 


চিনের শাসক দল কমিউনিস্ট পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি এবং পিএলএ-র কমান্ডার-ইন-চিফ পদেও রয়েছেন জিনপিং। শুক্রবার বাহিনীর সঙ্গে কথোপকথনের সময় তিনি উল্লেখ করেন, কীভাবে সংশ্লিষ্ট এলাকার (পূর্ব লাদাখ) দ্রুত পটপরিবর্তন হচ্ছে এবং কীভাবে তার প্রভাব পড়েছে সেনার ওপর। আলোচনা চলাকালীন জিনপিং সেনার যুদ্ধ-প্রস্তুতির বিষয়টি খতিয়ে দেখেন। সেই সময় এক জওয়ান জানান, তাঁরা ক্রমাগত সীমান্তে নজর রাখছেন। পাল্টা জিনপিংও জানতে চান, সেখানে তাঁরা কী অবস্থায় রয়েছেন এবং টাটকা সবজি পাচ্ছেন কি না।  


এর আগে গালওয়ানে দুই দেশের সেনা মুখোমুখি হয়েছিল। সীমান্ত বিবাদ গড়িয়েছিল রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে। ষাটের দশকের যুদ্ধের পরে সেটাই ছিল ভারত-চিনের মধ্যে সরাসরি প্রথম রক্তক্ষয়ী বিবাদ। ওই ঘটনায় অন্তত ২০ জন ভারতীয় জওয়ান মারা যান। চিনের তরফে সরকারিভাবে স্বীকার করা না হলেও নানা সূত্রে খবর পাওয়া যায়, ওই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন একাধিক চিনা জওয়ানও।


গত ডিসেম্বর মাসে অরুণাচল প্রদেশেও উত্তেজনা ছড়ায় । ওই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই ভারতীয় ভূখণ্ডের ভিতরে ঢোকার চেষ্টা চালাচ্ছে চিন। বারবার অরুণাচলকে নিজেদের এলাকা বলে দাবিও করেছে চিন সরকার। সেই অরুণাচলের তাওয়াংয়েই ভারতের এলাকায় ঢুকে পড়ার অভিযোগ ওঠে চিন সেনার বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, ওই ঘটনায় পাল্টা ভারতের বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল তোলে চিন। তারা দাবি করে, তারা নয়, ভারতের সেনাই চিনা ভূখণ্ডের মধ্যে ঢুকেছিল। চিনের দাবি, বেআইনি ভাবে ভারত-চিন সীমান্তের বিতর্কিত এলাকায় চলে আসে ভারতীয় সেনা। তারা নাকি চিনা টহলদারি দলকে বাধা দেয়। সেই কারণেই নাকি ঝামেলা হয়েছে।


সূত্রের খবর, অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সেক্টরে গত ৯ ডিসেম্বর উভয় পক্ষের সংঘর্ষে চিনা বাহিনীকে কড়া জবাব দেয় ভারত। সংঘর্ষে ভারতীয় জওয়ানদের থেকে চিনা জওয়ানদের জখম হওয়ার সংখ্যা বেশি। ওই সূত্রের আরও দাবি, চিনারা প্রায় ৩০০ সেনা নিয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিল। কিন্তু তৈরি ছিল ভারতীয় সেনাও। তবে ৯ ডিসেম্বর চিনা সেনা এবং ভারতীয় সেনার মুখোমুখি সংঘর্ষের পরপরই সেখান থেকে দুই দেশের বাহিনী সরে যায়। ফলে সংঘর্ষ আর বেশি দূর এগোয়নি।


আরও পড়ুন ; তাওয়াং-কাণ্ডে ভারতের ঘাড়ে দোষ চাপাল চিন, কী অভিযোগ?